নিজস্ব প্রতিনিধি: ঢিল ছুঁড়লে পাটকেল খেতে হয়। সেই আপ্তবাক্য ভুলে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই সিঙ্গুরের বুকে দাঁড়িয়ে বাংলার অগ্নিকন্যাকে আক্রমণ শানতে গিয়ে এবার তিনি নিজেই পাল্টা আক্রমণের মুখে পড়ে গেলেন। একগুচ্ছ দাবিকে সামনে রেখে সিঙ্গুরে তিনদিন ব্যাপী আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করেছে বঙ্গ বিজেপির কিষান মোর্চা। মঙ্গলবার এই আন্দোলনের প্রথম দিনে সিঙ্গুরের লোহাপট্টি থেকে সিংহ ভেড়ি পর্যন্ত মিছিলও করে বিজেপি। তারপর সিঙ্গুরের ধর্ণা মঞ্চ থেকে মমতাকে আক্রমণ শানেন শুভেন্দু। তার জেরেই শুভেন্দুকে এদিন পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
এদিন সিঙ্গুর থেকে শুভেন্দু মমতাকে নিশানা বানিয়ে বলেন, ‘কৃষকদের অধিকারের দাবি তুলে ক্ষমতায় এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, সেই দাবি তিনি রাখেননি। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ করেও তিনি যে কথা রাখবেন না তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। ক্ষমতায় আসার পর নবান্নে একটিও টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে মিটিং করেনি মুখ্যমন্ত্রী। ফলে, কৃষি দফতরও কাজ করতে পারেনি। সারের কালোবাজারি রোখা যায়নি। নিম্নমানের বীজ, সারের চড়া দামে কৃষকদের অবস্থা শোচনীয়।’ শুভেন্দুর এই আক্রমণের জেরেই কুণাল পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মমতার কৃষক-নীতি যদি ভ্রান্ত হয়, তা হলে তার ওপর ভর করে শুভেন্দু নিজের এবং তাঁর বাবার রাজনৈতিক কেরিয়ার তৈরি করলেন কেন? এত দিন পর বিবেক জাগল? মমতা শিল্পের বিরোধী নন, জোর করে কৃষিজমি কেড়ে নেওয়ার বিরোধী।’
এর পাশাপাশি কুণাল বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী আজ বলছেন, মমতার পথ ভুল। তা হলে ২০০৫ সাল থেকে কেন মমতার পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলানোর জন্য এত পীড়াপীড়ি করতেন? যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষক আন্দোলনে ভর করে শুভেন্দু ও শিশির অধিকারী নিজেদের রাজনৈতিক ভিত্তি পোক্ত করেছেন, আজ তাঁরাই বলছেন মমতার পথ ভুল! যদি এত দিন আগে থেকেই ভুল ধরে ফেলেন, তাহলে মমতার দয়ায় তৃণমূল কর্মীদের আবেগকে ব্যবহার করে নিজের রাজনৈতিক কেরিয়ার তৈরি করেছিলেন কেন? তথাগত রায়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়রা বিজেপি-র অন্দরে নারী ও অর্থের খেলা চলে বলে যে অভিযোগ করেছেন, তার জবাব দিতে হবে সুকান্ত, দিলীপ, শুভেন্দু অধিকারীদের। যে প্রধানমন্ত্রীকে কৃষকদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হয়, সেই দলের মুখে কৃষকের কথা মানায় না। কৃষকদের অধিকার কী ভাবে সুনিশ্চিত করতে হয় তা মমতা দেখিয়ে দিয়েছেন।’