নিজস্ব প্রতিনিধি: এ এক অন্য মমতা। না দেখলে বিশ্বাসই হবে না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী(Chief Minister of West Bengal) চা বাগানে(Tea Garden) গিয়ে চা তুললেন। তাও যা তা ভাবে নয়। ঠিক যেভাবে চা বাগানের মহিলা শ্রমিকরা মাথা দিয়ে পিঠের দিকে ঝুড়ি ঝুলিয়ে চা তোলেন, ঠিক সেইভাবেই চা তুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। উত্তরবঙ্গের(North Bengal) সফরে গিয়ে দ্বিতীয় দিন সকালে মুখ্যমন্ত্রী মকাইবাড়ি চা বাগানের(Makaibari Tea Estate) বাংলো থেকে বেড়িয়ে সোজা চলে যান চা বাগানে। সেখানে গিয়ে স্থানীয় মহিলা চা শ্রমিকদের মতো পিঠে ঝুড়ি নিয়ে চা পাতা তুলতে শুরু করেন তিনি। সেই ঘটনার ভিডিও এবার ভাইরাল হয়ে গেল সোশ্যাল মিডিয়াতে।
রাজনীতির কারবারিরাই বলেন, রাজনীতিতে জনসংযোগই শেষ কথা। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে তাঁর এই ধরনের জনসংযোগ শুধু তাঁর ইউএসপি নয়, কার্যত অন্যতম শক্তি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে একেবারে মিশে যেতে পারেন তিনি নিমেষেই। তাঁদের মাঝে গিয়ে, তাঁদের মতো হয়ে, তিনি জনসংযোগ করেন, যা দেশের অন্য কোনও নেতানেত্রীদের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। দেখাও যায় না। এই ধরনেরই জনসংযোগে অভ্যস্থ ছিলেন দুইজন। দেশের দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ইন্দিরা গান্ধি ও রাজীব গান্ধি। মমতাও তাঁদেরই মতো। আর তাঁর এই গুণাবলীই তাঁকে সবসময় এগিয়ে রাখে দেশের আর ৫জন রাজনীতিবিদদের থেকে।
পাহাড় হোক কী সমতল, গ্রাম হোক কী শহর, মমতা যখন যেখানে যান, সেখানেই স্থানীয়দের সঙ্গে দ্রুত জনসংযোগ সেরে নেন। জনসংযোগ চলে একেবারে মাটিতে নেমে, তৃণমূল স্তরে। সেখানকার সংস্কৃতি কিংবা কর্মসংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যান। এদিন সেই ছবিই দেখা গেল মকাইবাড়ি চা বাগানে। চা পাতা তোলার পাশাপাশি এখানকার শ্রমিকদের সঙ্গে কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘পাহাড় এবং সমতলের মধ্যে ঐক্যের বাঁধন তৈরি হয়েছে। আমি মনে করি সকলে একসঙ্গে আমরা কাজ করব। আমি কিন্তু মুখে বলি না। আমি রক্তের সম্পর্ক দিয়ে করে দেখাই। আমি খুব খুশি আজ। ওদের থেকে চা পাতা তোলা শিখলাম। তুললামও। আমি অনেকদিন আগে কবিতা লিখেছিলাম – দুটি পাতা একটি কুঁড়ি/ তার নাম চা-সুন্দরী। চা বাগান ভাল থাকুক, চা শ্রমিকরা ভাল থাকুক।’
মমতাকে সামনে পেয়ে চা বাগানের শ্রমিকরা তাঁদের নিজস্ব ভাষায় গানও গান সবুজে ঘেরা চা বাগানের মাঝে দাঁড়িয়ে। আর তাতে তাল মেলাতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকেও। পাহাড় সফরে গেলে বরাবরই তাঁকে অন্য মুডে দেখা যায়। কখনও পাহাড়ে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ছোট্ট দোকানঘরে ঢুকে মোমো বানানো কিংবা ছোটদের কোলে তুলে আদর করে দেওয়া। এভাবেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে অভ্যস্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড়বাসী। আর এবার মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা গেল চা শ্রমিকের ভূমিকায়! কার্শিয়াংয়ে গিয়ে একেবারে চা শ্রমিকের ভূমিকা পালন করলেন। পরে তিনি চা শ্রমিকদের বস্ত্র বিতরণও করেন।