নিজস্ব প্রতিনিধি: অধিকারীদের জেলায় সভা করতে এসে অধিকারীদের নিশানা বানাবেন না তা কী হয়! সকলে তাই তাকিয়ে ছিলেন সোম দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার তমলুকে(Tamluk) সভা করতে এসে তৃণমূল সুপ্রিমো কোন বাক্যবাণে বিদ্ধ করেন অধিকারীদের(Adhikari Family)। মানে শিশির অধিকারী, শুভেন্দু অধিকারী, দিব্যেন্দু অধিকারী এবং সৌমেন্দ্যু অধিকারীদের। সেই আশা বৃথা গেল না। তিনি মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) অধিকারীদের জেলায় দাঁড়িয়ে অধিকারীদেরই নিশানা বানালেন। এমনকি তাঁদের মহিলাঘটিত কেসও ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গেলেন। এদিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সদর শহর তমলুকে ছিল মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি জনসভা। সেই সভা থেকেই তিনি নাম না করেই নিশানা বানিয়েছেন অধিকারীদের।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জোর করে গায়ের জোরে কাউকে খুন করে, কারও থেকে লুঠ করে, টাকার জোরে নিজে কোটি-কোটি মালিক হয়ে অন্যদের বলছে চোর। চোরের মায়ের বড় গলা। বাসে বা ট্রেনে দেখেছেন, যে পকেটমারি করে, সেই প্রথম চোর-চোর বলে। আর তারপর যখন সবাই উঠে দাঁড়ায়, তখন নিজে পালিয়ে যায়। গদ্দারদের কমরেড, গদ্দারবাবু। আমি নাম বলি না। নাম বলতে আমার লজ্জা লাগে। যখন পার্টিতে ছিল, তখন সবথেকে বেশি পেয়েছে। যেটা আমরা কোনওদিন ভাবতে পারিনি। সবথেকে বেশি খেয়েছে। কিন্তু লঙ্কাকাণ্ডের মতো যাতে নিজে ধরা না পড়ে, সেজন্য কোর্টে গিয়ে গরিব ছেলেমেয়েদের চাকরি খেয়ে সাধু সেজে বসে আছেন। এই সাধুদের চক্রান্ত আমরা বের করব। পূর্ব মেদিনীপুরে স্কুলশিক্ষায় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে কার জন্য? আমিও সব খবর রাখি। কিসের বিনিময়ে চাকরি হয়েছে? আমি বলছি, কারও চাকরি আমি যেতে দেব না। গদ্দারই এখানে সব থেকে বেশি খেয়েছে। সব থেকে বেশি দুর্নীতি করেছে। স্কুল এডুকেশনে সবথেকে বেশি পকেটমারি করেছে কে? ভুলে গিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের লোক? আমি কারও চাকরি যেতে দেব না। ওরা চাকরি খায়। আমি চাকরি দিই। তাই আমি কাউকে টাচ করছি না। কিন্তু আজকে আমি টাচ করছি না বলে মাথাকে আমি কোনওদিন টাচ করব না… (সেটা ভাববেন না)। আমায় অতটা বিশ্বাস করবেন না। আমি তাঁদের বিশ্বাসী, যাঁরা আমায় বিশ্বাস করেন। আমি মানুষকে বিশ্বাস কর।।’
মমতা এদিন একুশের ভোটযুদ্ধের নন্দীগ্রামে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিতর্কিত জয় ও সেই নিয়ে মামলাটি নিয়েও মুখ খুলেছেন। বলেছেন, ‘নন্দীগ্রাম মামলা এখনও বিচারাধীন। আড়াই বছর হল। কী হয়েছে সবাই জানে। চোরের মায়ের বড় গলা। মানুষ একদিন এর জবাব দেবে। গদ্দারদের মহিলাঘটিত ঘটনা মিডিয়া দেখতে পায় না। আমি কিন্তু সময় হলেই সব ফাঁস করে দেব। ঠিক সময়ে মানুষের সামনে নিয়ে আসব। যার ভাই মারা গিয়েছিল, তাঁর বউ কেস করেছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিচার পায়নি। আমি বলেছি. বিচার পাবে। ভগবান বলে কিছু থাকে, তাহলে বিচার পাবে। সব চুপচাপ রয়েছে। কতক্ষণ চেপে রাখবেন, দেখব আমি। কোনো ছেলে মেয়ের চাকরি যেতে দেব না। আমি কারোর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। গদ্দারবাবুরা সব থেকে বেশি খেয়েছে। সব থেকে বেশি পেয়েছে।’