নিজস্ব প্রতিনিধি: রাতের ঘুম ছুটেছে গেরুয়া ব্রিগেডের। কেননা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Mamata Banerjee) ডেকে তাঁকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি তাঁকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করতে চলেছে নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদ(Namoshudra Bikash Parishad)। মূলত মতুয়া সমাজের নাগরিকদের নিয়ে গড়ে ওঠা এই সংগঠনটি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নদিয়ার কল্যাণীতে(Kalyani) রাষ্ট্রীয় অধিবেশন(Rashtriya Adhibeshan) ডাকতে চলেছে। সেই সভাতেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। নবান্নের তরফে ইতিমধ্যেই সেই আমন্ত্রণে সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। এবার সভার দিনক্ষণ ঠিক হলেই তা সরকারি ভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে। নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদ ওই অধিবেশনের সভা থেকেই তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে চায় এই রাজ্যে নমঃশূদ্র সমাজের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। সেই সঙ্গে তাঁকে সংবর্ধনাও দিতে চায় মতুয়া সমাজের উন্নয়নের জন্য। ঘটনা হচ্ছে এই নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদই উনিশের লোকসভা নির্বাচন ও একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে কাজ করেছিল। কিন্তু এখন তাঁরাই মমতামুখী। আর এখানেই রাতের ঘুম ছুটেছে বঙ্গ বিজেপির।
বাংলার ৮০টি বিধানসভায় ছড়িয়ে রয়েছে মতুয়া ভোট। সেই সঙ্গে ১২টি লোকসভা কেন্দ্রেও ছড়িয়ে রয়েছে সেই ভোট। মতুয়া সমাজের মাথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমার ঠাকুরনগরের ঠাকুর পরিবার। সেই পরিবারই রাজনৈতিক ভাবে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। মমতাবালা ঠাকুর ছিলেন তৃণমূলের(TMC) পক্ষে ও শান্তনু ঠাকুর ছিলেন বিজেপির(BJP) পক্ষে। কিন্তু নাগরিকত্ব ইস্যু ও সিএএ লাগু করার বিষয়টি নিয়ে মতুয়াদের সঙ্গে বিজেপির দূরত্ব এখন যেমন ক্রমশ বেড়ে চলেছে তেমনি শান্তনু ঠাকুরের দিক থেকেও আর কড়া তৃণমূল বিরোধী বক্তব্য শোনা যাচ্ছে না। মতুয়া সমাজও ক্রমশ ফের তৃণমূলমুখী যে হতে শুরু করেছে সেটা সাম্প্রতিক কালে হয়ে যাওয়া পুরনির্বাচনেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। রীতিমত মতুয়া প্রভাবিত বনগাঁ, গোবরডাঙা, চাকদহ, হরিণঘাটা, বীরনগরের মতো পুরসভাগুলিতে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। এবার নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদও তৃণমূলমুখী হয়ে পড়ছে। স্বাভাবিক ভাবেই উনিশে বিজেপি বাক্সে আর মতুয়া ভোট পড়বে কিনা তার জেরে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আর তাতেই ঘুম ছুটেছে বিজেপির।