নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলায় বসবাসকারী প্রত্যেকটি পরিবারের জন্য নির্দিষ্ট পরিচিতি-ভিত্তিক তথ্যভান্ডার তৈরির পথে হাঁটা দিতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। আর সেই পথে তাঁদের অন্যতম ভরসার জায়গা হয়ে উঠতে চলেছে নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকারের চালু করা Aadhaar Card। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন রাজ্যের প্রত্যেক পরিবারের জন্য একটি করে নির্দিষ্ট পরিচিতি পত্র তৈরি হোক। সেই পরিচয় পত্রের নাম রাখা হচ্ছে Bangla Unique Identity Card বা BUIC। এই পরিচয় পত্র তৈরি করা হচ্ছে দুটি লক্ষ্য নিয়ে। এক, প্রতিটি পরিবারের তথ্য রাজ্য সরকারের কাছে রাখা এবং দুই, বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা প্রদানের পথ মসৃণ করা। রাজ্যের সর্বত্র সমীক্ষা চালিয়ে এই পরিবারভিত্তিক তথ্যভান্ডার তৈরি করা হবে। এখন আধার নম্বর থেকে যেমন এক জন ব্যক্তি সম্পর্কে বায়োমেট্রিক-সহ বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়, তেমনই একটি পরিবার সম্পর্কে জরুরি তথ্য এক লপ্তে হাতে আসবে রাজ্যের এই নতুন পরিচয় পত্র থেকে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার যে তথ্য ভান্ডার গড়ে তুলতে চাইছে তাতে একটি পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে তথ্য যেমন থাকবে তেমনি সেই পরিবারের কোন কোন সদস্য কোন কোন সরকারি সুযোগ সুবিধা পান সেই বিষয়গুলিও তোলা থাকবে। যে সমস্ত পরিবার কোনও না কোনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নেয়, প্রাথমিক ভাবে তাদেরই এই পরিচিতি দেওয়া হবে। তবে তার বাইরেও কোনও পরিবার তা চাইলে, তাঁদের বিমুখ করবে না রাজ্য সরকার। সরকারি পরিষেবা পেতে এখন অনেক কাগজপত্রই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের জন্য আলাদা-আলাদা ভাবে জমা দিতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ। নতুন ব্যবস্থা চালু হলে, বারবার কাগজ জমা দেওয়ার ঝক্কি অনেকটাই কমবে। বলা চলে, ব্যাঙ্কে KYC চালু হওয়ার পরে অনেকটা যে ধরনের সুবিধা পান গ্রাহকেরা এক্ষেত্রেও সেই একই সুবিধা পাবেন তাঁরা।
এই পরিষেবা চালু করা নিয়ে রাজ্যের সরকারি স্তরে বেশ কয়েকটি বৈঠকও সেরে ফেলেছেন প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, খাদ্যসাথীর তথ্যকেই মানদণ্ড হিসেবে ধরা হবে। কারণ, রাজ্যে প্রায় ৮.৮৩ কোটি Digital Ration Card রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৮.৫৮ কোটি কার্ডের সঙ্গে Aadhaar যুক্ত। পাশাপাশি চলছে প্রত্যেক Ration Card’র সঙ্গে উপভোক্তার মোবাইল নম্বর যুক্ত করার কাজ। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, Biometric এবং Aadhaar’র মাধ্যমে যাচাই হওয়া এই কার্ডগুলি নকল করা শক্ত। সুতরাং, এই কার্ডধারীদের দাখিল করা নথি প্রাথমিক ভাবে যাচাই হয়েই রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এ বছরের শেষের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া যেমন শেষ হবে, তেমনই পরিবারভিত্তিক নথিবদ্ধকরণও চালু করা যাবে। তবে বছর শেষে লোকসভা ভোটের দামামা বাজলে এই পরিষেবা ভোটের পরে চালু হবে।