নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের ৫টি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বেশ ভালই ফল করেছে বিজেপি(BJP)। ৪টি রাজ্যে তাঁরা সরকার গড়তে চলেছে। ওই ৪টি রাজ্যেই তাঁরা ক্ষমতায় ছিল এবং সেই ক্ষমতা ধরে রেখেই তাঁরা আগামীর পথে পা বাড়াল। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে(Uttar Pradesh) তাঁদের জয় নিয়ে বৃহস্পতিবার গেরুয়া শিবিরকে বিঁধলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় নিজের ঘরে বসে রাজ্য বাজেট নিয়ে নিজের বক্তব্য জানাবার সময়েই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সরব হন মমতা উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে। সেখানে তিনি নাম না করে যেমন মোদিকে বিঁধেছেন তেমনি ইভিএমের(EVM) গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। সাফ জানিয়েছেন, ‘উত্তরপ্রদেশে ভোট লুঠ হয়েছে। মানুষের ভোটে জেতেনি বিজেপি। ইভিএমে কারচুপি করা হয়েছে। ওইসব ইভিমের ফরেনসিক টেস্ট করা উচিত।’
এদিন মুখ্যমন্ত্রী নাম না করেই আক্রমণ শানেন মোদিকে। বলেন, ‘কয়েকটা রাজ্যে জিতে ২০২৪-এর জন্য লাফাচ্ছে। বাংলায় গোহারা হেরেও লজ্জা নেই। এ যেন মৃত্যুর আগে ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দেওয়া। জন্মের আগে অন্নপ্রাশনের দিন ঘোষণা করা। এখনও তো দু’বছর বাকি। কত কী হতে পারে এই দু’বছরে। বারাণসীর এডিএমকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলেও সংবাদপত্রে দেখেছি। এ তো মারাত্মক ঘটনা। বিজেপি পঞ্জাবে কিছু করতে পারেনি। কারণ ওদের রুখে দেওয়া হয়েছে। বাংলাতেও একইভাবে ভোট করাতে চেয়েছিল তাঁরা। কিন্তু প্রতিরোধ হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে যে ভাবে জিতেছে বিজেপি, তাতে তাদের ভাল হবে না। বিজেপিকে ঠেকাতে হলে বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলিতে একজোট হতে হবে।’
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশের ভোটের ফলাফল ঘিরে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ(Akhilesh Yadav) একা লড়েছে। তারপরেও ৩৭ শতাংশ ভোট বেড়েছে, বেড়েছে ৭৮টি আসন। ওখানে বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হয়ে গিয়েছে। ওই ভোটটা ভাগ না হলেই ফলটাও অন্যরকম হত। কেননা এই ভোট ভাগাভাগির মধ্যেও বিজেপি উত্তরপ্রদেশে ৫৪টি আসন হারিয়েছে। আমার তো মনে হয় অখিলেশকে জোর করে হারানো হয়েছে। ইভিএম কারচুপি হয়েছে। ফরেন্সিক টেস্ট হওয়া দরকার। এতবার যখন সে রাজ্যে ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তা হলে তার ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো দরকার। বিজেপির জয় আসলে মানুষের ভোটের ফল না, যন্ত্রের কারসাজি। বিজেপির জয় নিয়ে যেটা বলা হচ্ছে, যদি ভালভাবে হিসাব করে দেখা যায়, দেখা যাবে অখিলেশজীর ভোট ছিল আগে ২১ শতাংশ। এবার ৩৭ শতাংশের আশেপাশে ভোট পেয়েছেন। ওখানে লুঠ চলেছে। অখিলেশ যেন হতাশ না হন। জনতার কাছে যান। এটাকে চ্যালেঞ্জ মনে করে ওনার লড়াই করা উচিত। ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হোক ইলেকট্রনিক মেশিনের। কারণ, এটাও দেখা দরকার এ কি সেই মেশিনই যেখানে মানুষ ভোট দিয়েছিলেন, নাকি এটা সেই মেশিন যেটা দ্বিতীয়বার আনা হয়েছে।’