নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামিকাল ১২ এপ্রিল থেকে উত্তরবঙ্গে(North Bengal) দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই কারণে এদিন বিকালেই তিনি রওয়ানা দিচ্ছেন উত্তরবঙ্গের পথে। আগামিকাল তাঁর জোড়া সভা আছে কোচবিহার জেলার দিনহাটায় এবং আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনিতে। এর আগে ৪ থেকে ৬ এপ্রিল উত্তরবঙ্গে প্রতিদিন দু’টি করে জনসভা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ির ভোট ১৯ এপ্রিল। তার পরের পর্যায়ে ২৬ এপ্রিল ভোট রয়েছে বালুরঘাট, রায়গঞ্জ এবং দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে। এই আবর্তে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়িতে আরও সাতটি সভা করবেন মমতা। শুক্রবার কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারের পর শনিবার তিনি জলপাইগুড়িতে একটি সভা করে ফিরবেন কলকাতায়। নববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও সাধারণ মানুষের মঙ্গল কামনা করে তিনি পুজো দেবেন কালীঘাট মন্দিরে। পরের দিনই ফের প্রচারে যাবেন উত্তরবঙ্গে।
নববর্ষের পরের দিন অর্থাৎ ১৫ এপ্রিল কোচবিহারের রাস মেলা ময়দানে তিনি সভা করবেন। ওইদিন তাঁর দ্বিতীয় সভা রয়েছে আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ায়। ১৬ এপ্রিল মমতা সভা করবেন জলপাইগুড়িতে। তারপরে শিলিগুড়িতে এসে যোগ দেবেন মেগা পদযাত্রায়। ১৭ তারিখ মমতা যাবেন অসমে। সেখান থেকে ফিরে দুই দিনাজপুর, মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে প্রচার করবেন তিনি। সূচি না বদলালে মুখ্যমন্ত্রী ১৮ এপ্রিল হরিরামপুর, ২১ তারিখ কুমারগঞ্জ ও ২২ তারিখ বালুরঘাট অথবা গঙ্গারামপুরে সভা করবেন। ঘটনাচক্রে গত ৪ এপ্রিল কোচবিহার সাক্ষী থেকেছে মমতা-মোদি দ্বৈরথের। এবারও মমতা উত্তরবঙ্গে থাকাকালীন ১৬ এপ্রিল বালুরঘাট এবং রায়গঞ্জে সভা করবেন নরেন্দ্র মোদি। উল্লেখ্য, উনিশের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের ৮টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৭টিতেই জয়ী হয়েছিল বিজেপি(BJP)। কিন্তু একুশের ভোটে উত্তরবঙ্গে কিছুটা হলেও জমি ফিরে পায় তৃণমূল(TMC)। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও উত্তরবঙ্গের সব জেলা পরিষদ গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। হাতেগোনা ২-১টি পঞ্চায়েত সমিতি ছাড়া বাকি সব পঞ্চায়েত সমিতিই গিয়েছে জোড়াফুলের দখলে। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরেও তৃণমূলের সুনামি বয়ে গিয়েছে।
এই অবস্থায় ২৪’র লোকসভা নির্বাচনেও(Loksabha Election 2024) সেই ধারা অব্যাহত রাখতে কোমর বেঁধে নেমেছে জোড়াফুল শিবির। ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনের পর একের পর এক দলীয় কর্মসূচি এবং বিজেপির বাংলার প্রতি ‘বঞ্চনা’কে হাতিয়ার করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রথম দফার নির্বাচনী প্রচারে, মমতা মানুষকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিয়েছিল বিজেপি। উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে বড় ফ্যাক্টর রাজবংশী ভোট। তাঁদের দেওয়া কথাও যে বিজেপি রাখেনি, তা আগের নির্বাচনী সভাতে তুলে ধরেছেন তৃণমূল নেত্রী। সেই সঙ্গে রাজবংশীদের জন্য তাঁর সরকারের নেওয়া জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। এবারও মমতা সেই পথেই হাঁটবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শুক্রবারের সভা থেকেই উত্তরবঙ্গে বিজেপি বিরোধিতার সুর সপ্তমে তুলতে প্রস্তুত হচ্ছে তৃণমূলও।