নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর হুগলির শ্রীরামপুর থেকে এক শিশু-সহ একই পরিবারের দুই গৃহবধূ নিখোঁজ হয়ে যান। যা নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য। প্রথম দিকে খোঁজ পাওয়া না গেলেও পরে জানা দুই গৃহবধূ স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়েছিলেন। প্রেমের টানেই দুই জা পালিয়ে গিয়েছিলেন দুই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে। এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে যায়, দুই রাজমিস্ত্রি শেখর রায় এবং শুভজিৎ দাস গ্রেফতার হয় অপহরণের অভিযোগে। এখন অবশ্য জামিনে মুক্ত। কিন্তু দুই রাজমিস্ত্রি আজও প্রেমের স্বীকৃতি দিতে পিছপা নয়। শেখর এবং শুভজিৎ জানিয়ে দিলেন, তাঁরা বিয়ে করতে চান প্রেমিকা রিয়া ও অনন্যাকে। তবে সমস্ত আইন মেনেই।
দুই গৃহবধূ এবং এক শিশুকে অপহরণের মামলায় গত ৩০ ডিসেম্বর জামিন পেয়েছেন শেখর এবং শুভজিৎরা। বৃহস্পতিবার হাওড়া আদালতে এসেছিলেন দু’জনেই। সেখানেই তাঁরা জানালেন মনের কথা। বললেন, অনন্যা এবং রিয়া দু’জনকেই ভালবাসেন তাঁরা দু’জনে। যদি ওই দুই গৃহবধূ চান, তা হলে তাঁদের সঙ্গে সংসার পাততেও রাজি। তবে পুরো আইনি প্রক্রিয়া মেনে বিয়ে করবেন এবার। শেখরের কথায়, ‘রাজমিস্ত্রি বলে কি আমরা মানুষ নই! আমাদের কি মন নেই! আমরাও তো ভালবাসতে পারি’। তাঁদের আইনজীবী শীর্ষ চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ওই দুই গৃহবধূ স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছিলেন। পুলিশ চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়ার পরেই রাজমিস্ত্রিদের জামিন দেওয়া হয়। এখন রিয়া এবং অনন্যাকে বিয়ে করতে চাইছেন শেখররা’।
গত গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর নিজের সন্তানকে নিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান বালির নিশ্চিন্দা থানার কর্মকার পরিবারের বধূ রিয়া, তাঁর সঙ্গে যা অনন্যা। পরে পুলিশ জানতে পারে পরিচিত দুই রাজমিস্ত্রির প্রেমের টানে বাড়ি ছেড়ে মুম্বই পাড়ি জমিয়েছেন সকলে। এরপর বাড়ি ফেরার পথে আসানসোল স্টেশন থেকে সকলকেই আটক করে পুলিশ। রিয়া ও অনন্যাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও গ্রেফতার করা হয় দুই রাজমিস্ত্রিকে। কিন্তু গোপন জবানবন্দি ও প্রকাশ্যেই দুই বধূ জানিয়েছিলেন তাঁরা স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছিলেন, কোনও অপহরণের ঘটনা ঘটেনি। এরপর পুলিশও সেই রিপোর্ট দেওয়ার পর দুই রাজমিস্ত্রির জামিন মঞ্জুর করে হাওড়া আদালত। এখন তাঁরা রিয়া ও অনন্যাকে বিয়ে করতে চাইলেও তাঁদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কারণ, শ্বশুরবাড়িতে ঠাঁই হয়নি তাঁদের, মাথা গুঁজেছেন বাপের বাড়ি।