নিজস্ব প্রতিনিধি: একা মমতায়(Mamata Banerjee) রক্ষে নেই, জুড়ে গেল কিনা অষ্টমিও। হ্যাঁ এই অষ্টমিও(Aashtami Sen) বাংলারই এক মেয়ে। একুশের নির্বাচনে বাংলার এক মেয়ে যেমন তাঁর ভাঙা পা নিয়ে হুইল চেয়ারে বসে বসে দেশের সর্বশক্তিমান প্রধানমন্ত্রী(Prime Minister) ও তাঁর দলবলকে ভেলকি দিয়েছিলেন তেমনি ‘পরীক্ষা পে চর্চা’(Pariksha Pe Charcha) অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে রীতিমত বেসামাল করে দিলেন বাংলারই এক মেয়ে। গোটা দেশ দেখল সেই দৃশ্য। এমনকি পরে তা সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হতেও বেশি সময় লাগল না। দেশের প্রধানমন্ত্রীকে যে এই বাউন্সার দিয়ে ঘায়েল করেছে সে আর কেউ নয়, বাংলারই মেয়ে অষ্টমি সেন। বাড়ি তাঁর উত্তরবঙ্গের(North Bengal) জলপাইগুড়িতে(Jalpaiguri)। সেই উত্তরবঙ্গ যা ভেঙে টুকরো টুকরো করার নিরন্তন পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে গেরুয়া শিবির। সেই উত্তরবঙ্গ যে পদ্মশিবিরের হায়ে উনিশের ভোটে প্রায় সব আসনই তুলে দিয়েছিল। একুশেও হাত উপুড় করে ভোট দিয়েছিল। এখন সেখান থেকেই উঠে আসছে ক্লন বোল্ড করার মতো সব প্রশ্ন। তাও সোজা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)র দিকে।
আরও পড়ুন আস্থা মমতায়, আস্থা স্বাস্থ্যসাথীতে, ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে
ঠিক কী হয়েছে? শুক্রবার দিল্লির তালকাটোরা ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয় ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানটি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা পড়ুয়াদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছিলেন। সেই অনুষ্ঠান আবার সরাসরি সম্প্রচারিত হয় দূরদর্শন সহ বেশ কিছি সংবাদ সংস্থার চ্যানেলে চ্যানেল। সম্প্রচার হয়েছিল ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়াতেও। সেই অনুষ্ঠানেই প্রধানমন্ত্রীকে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল বেশ কিছু পড়ুয়াকে। বাংলার জলপাইগুড়ির বাসিন্দা একাদশ শ্রেণির ছাত্রী অষ্টমি সেনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল সেই লক্ষ্যেই। সেই অষ্টমিই কিনা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে বসল, ‘সংবাদমাধ্যম ও বিরোধীদের সমালোচনা সামলান কীভাবে?’ আর সেই প্রশ্নবাণে রীতিমত ধাক্কা খেলেন প্রধানমন্ত্রী। সারা দেশ দেখল তাঁর সেই অস্বস্তি। শেষে ধাক্কা সামলে উঠে হাসিমুখে জবাব দিলেন, ‘এটা আউট অব সিলেবাস। যে কোনও সমালোচনাই হচ্ছে গণতন্ত্রের জন্য শুদ্ধিযজ্ঞ। আপনি যদি পরিশ্রমী ও সৎ হন, তাহলে সমালোচনাকে পাত্তা দেবেন না। কারণ এগুলিই আপনার শক্তি হয়ে উঠবে।’ কিন্তু যতই উত্তর দিন না কেন প্রধানমন্ত্রী বাংলার মেয়ের প্রশ্নে তাঁর এই দশা দেখল গোটা দেশবাসী। তাবড় তাবড় নেতা থেকে সাংবাদিকরাও যা পারেন না, সেটাই কিনা করে দেখাল অষ্টমি।
আরও পড়ুন আবাসের লক্ষ্যপূরণে মোদির ভরসা সেই মমতার বাংলাকেই
জানা গিয়েছে,‘পরীক্ষা পে চর্চা’র জন্য দেশের নানাপ্রান্ত থেকে প্রায় ২০ লক্ষ প্রশ্ন জমা দিয়েছিলেন পড়ুয়ারা। মোদি তার মধ্যে থেকে বাছাই করা কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দেবেন বলে আগেই ঠিক করে রাখা হয়েছিল। সেই মতোই সব কিছু সাজানো হয়েছিল। তার মধ্যেই ছিল দক্ষিণ সিকিমের রঙ্গিতনগরের ডিএভি পাবলিক স্কুলের পড়ুয়া অষ্টমির ওই প্রশ্নও। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির সাতখুরার সিপাহিপাড়ার বাসিন্দা অষ্টমির বাবা এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী। কর্মসূত্রে পরিবারকে নিয়ে অবশ্যই সিকিমেই থাকেন। ‘পরীক্ষা পে চর্চা’র জন্য গত ডিসেম্বর মাসেই ইমেলে প্রশ্নটি পাঠিয়েছিল অষ্টমি। গত ২২ জানুয়ারি সরকারের তরফে তা বেছে নেওয়ার কথা জানানো হয়। এরপর প্রশ্নটির ভিডিও রেকর্ড করে নিয়ে যান সরকারি আধিকারিকরা। অষ্টমি ছাড়াও একই ধরনের প্রশ্ন এদিন করেছিল গুজরাতের ছাত্রী কুমকুম সোলাঙ্কি ও বেঙ্গালুরুর ছাত্র আকাশ দারিরা। জবাবে পড়ুয়াদের ইতিবাচক সমালোচনা ও নেতিবাচক সমালোচনার পার্থক্য বুঝিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী।