নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৫ বছর ধরে নিখোঁজ মা। আর সেই কারণে নিখোঁজ বৃদ্ধার পুতুল তৈরী করে শ্মশানে সৎকার করলেন তাঁর ছেলেরা। যদিও তিনি জীবিত আছেন না কি মৃত তাও জানেন না তাঁর ছেলেরা। এই ঘটনা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যদিও বিষয়টিকে বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মীরা পাগলামি আখ্যা দিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানি স্টেশনপাড়ায়। রবিবার দুপুরে ধর্মীয় রীতি মেনে মায়ের আদলে গড়া ওই পুতুলের দাহ করা হয় স্থানীয় কালারাম শ্বশানঘাটে। সৎকারের ১৩ দিনের মাথায় মায়ের শ্রাদ্ধশান্তি করবেন বলেও জানিয়েছেন পরিবারের লোকেরা। তাদের বিশ্বাস মা জীবিত নেই, তাই তাঁর আত্মার শান্তি কামনায় গ্রামের সালিশিসভার পরামর্শে এই কাজ করা হয়েছে।
শিলিগুড়ির অদূরে রাঙাপানি কালারাম জোতের রেলস্টেশন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন সাবিত্রীদেবী চৌধুরী। স্বামী ও তিন সন্তনের সঙ্গে থাকতেন তিনি। তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন সাবিত্রীদেবী। প্রায় ১৫ বছর আগে একদিন সকলের অগোচরে বাড়ি ছেড়ে চলে যান তিনি। নিখোঁজ হওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ৭০ বছর। দীর্ঘদিন না খোঁজ মেলায় ওই বৃদ্ধার তিন সন্তান বিশ্বনাথ চৌধুরী, রঘুনাথ চৌধুরী ও সুজিত চৌধুরী ধরে নেন তাঁদের মা মারা গিয়েছে। আর এই বিষয়ে গ্রামের সালিশি সভার পরামর্শে তাঁরা ধর্মীয় রীতি মেনে মায়ের পুতুল গড়ে সৎকারের সিদ্ধান্ত নেন। পুরোহিতের বিধান মেনেই পরিবারের লোকেরা তৈরি করেন মানব দেহের আদলে একটি পুতুল। সেই পুতুলকে ফুল দিয়ে সাজিয়ে হরিনাম ধ্বনি দিতে দিতে নিয়ে যাওয়া হয় কালারাম শ্মশানঘাটে। সঙ্গে যান বেশ কয়েকজন শ্মশানযাত্রীও। সেখানেই সনাতন ধর্মের রীতিনীতি মেনে সৎকার করা হয় ওই পুতুলকে।
সাবিত্রীদেবীর এক ছেলে রঘুনাথ চৌধুরী এ বিষয়ে জানান, মা বেঁচে আছে কিনা জানি না। গ্রামের লোকের পরামর্শে মায়ের আত্মার শান্তি কামনাতেই এই কাজ করা হয়েছে। অন্যদিকে এই ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মীরা। কুসংস্কার বিরোধী আন্দলনের এক কর্মী জানান, কোনও ব্যক্তি ১২ বছরের বেশি সময় নিরুদ্দেশ থাকলে তাঁকে মৃত ঘোষণার জন্য আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। ওই বৃদ্ধার ছেলেরা সেগুলি করেছেন কি না জানি না। তা ছাড়া এমন কাজ পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়।