নিজস্ব প্রতিনিধি: জলের রুপোলি শস্যের জোগান বাড়াতে এবার অভিনব উদ্যোগ নিল সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিফরি)। গঙ্গায় ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে নয়া পদক্ষেপ করছে ওই প্রতিষ্ঠান। এবার ডাঙায় ইলিশের ডিমপোনা তৈরি করে নদীতে ছাড়ছে ওই সংস্থা।
ইলিশের ডিমপোনা তৈরির এই কাজ করার জন্য প্রথমে গঙ্গা থেকে স্ত্রী ইলিশের ডিম এবং পুরুষ ইলিশের মিল্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। মিল্ট হচ্ছে পুরুষ মাছের শরীর থেকে নির্গত পদার্থ যা ডিম্বানুকে নিষিক্ত করে। এর পর স্থলভাগে ডিম ও মিল্ট নিয়ে নিষেক প্রক্রিয়া ঘটানো হচ্ছে। তার পর সেই নিষিক্ত ডিম্বানু হ্যাচিং করা হচ্ছে। এর পর ছাড়া হচ্ছে গঙ্গায়। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার এই নতুন প্রকল্পে মাত্র দেড় মাসে গঙ্গায় পাঁচ লক্ষ ইলিশের ডিমপোনা ছাড়া হয়েছে।
সিফরি সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরাক্কা ব্যারাজের নীচের দিকে প্রবাহিত গঙ্গায় সবচেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যায়। আট দশ বছর আগে যা বেশি পাওয়া যেত ফরাক্কা ব্যারাজের উপরের দিকের গঙ্গায়। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে বিহারের সাহেবগঞ্জ থেকে শুরু করে উত্তর প্রদেশের বেনারস ও এলাহাবাদ পর্যন্ত ইলিশ মিলত। এখন ফরাক্কা ব্যারাজের উপরের দিকের গঙ্গায় আর আগের মতো মেলে না ইলিশ। মূলত ছোট যথেচ্ছে হারে ইলিশ ধরে নেওয়ার ফলে ইলিশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। ইলিশের বংশবিস্তারও হচ্ছে না বেশি। সেই কারণে গঙ্গায় ইলিশের সংখ্যা বাড়াতে এবার এই কাজ শুরু করা হয়েছে।
সিফরি কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প নিয়ে জানিয়েছে, পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ইলিশের মিল্ট এবং স্ত্রী ইলিশের ডিম সংগ্রহ করা হচ্ছে ফরাক্কা এবং গোদাখালি থেকে। এর পর ওষুধ প্রয়োগ করে ডাঙায় নিষেক (ফার্টিলাইজেশন) ঘটানো হচ্ছে। তারপর নিষিক্ত ডিম্বানু হ্যাচিং করা হচ্ছে। সেই হ্যাচিং করা ডিমপোনা ফরাক্কা ব্যারেজের আপ স্ট্রিমে ছাড়া হচ্ছে। সিফরির এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ডিমপোনা থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ হতে সময় লাগে এক বছরের বেশি। গঙ্গায় যে ডিমপোনা ছাড়া হচ্ছে তার ৫-১০ শতাংশও যদি বেঁচে যায়, তাহলে কয়েক লক্ষ ইলিশ উৎপাদন বাড়বে গঙ্গায়। সিফরির ডিরেক্টর ডঃ বসন্তকুমার দাস বলেন, গঙ্গায় ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা অনেক পদক্ষেপ করছি। ডাঙায় ডিমপোনা তৈরি করে গঙ্গায় ছাড়ার প্রকল্পটি একেবারে নতুন। প্রথমে আমরা দেড় লক্ষ ডিমপোনা তৈরি করে ছেড়েছিলাম। পরে আরও সাড়ে তিন লক্ষ ডিমপোনা ছাড়া হয়েছে।