নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার মেধাবী পড়ুয়ারা যাতে অর্থাভাবে উচ্চশিক্ষা বা গবেষণা থেকে বঞ্চিত না থাকেন তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) চালু করেন Student Credit Card। সেই কার্ডের দৌলতে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায় আর সেটাও কোনও কিছু বন্ধক না রেখেই। কেননা সেই ঋণের জন্য রাজ্য সরকারই জামানতকারী হিসাবে কাজ করে। ১৫ বছর ধরে সেই ঋণ শোধ করা যায় এবং তার জন্য মাত্র ৪ শতাংশ সুদ গুণতে হয় ঋণ নেওয়া পড়ুয়াকে। এই কার্ড চালু হওয়ার পর থেকে যাচ্ছে পরবর্তীকালে যে সব দুয়ারে সরকার শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিটিতেই এই কার্ডের জন্য গুচ্ছের আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত রাজ্যে যে ষষ্ঠ পর্যায়ের দুয়ারে সরকার(Duyare Sarkar) শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে সারা রাজ্যে মাত্র ১৪৪টি আবেদন জমা পড়েছে এই কার্ডের জন্য। নবান্ন(Nabanna) সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন অভিষেককে নয়া নোটিস, ল্যাজ গুটিয়ে পালালো CBI
নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, Student Credit Card চালু হওয়ার পরে এই কার্ড নিয়ে বেশ উৎসাহ দেখা গিয়েছিল পড়ুয়াদের জন্য। অনেকেই আবেদন করেছিলেন, অনেকেই ঋণও পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন কোথাও এই প্রকল্পে আবেদনের ক্ষেত্রে অনীহা তৈরি হয়েছে। ষষ্ঠ দফার দুয়ারে সরকারের শিবিরে এই ক্রেডিট কার্ডের জন্য সবচেয়ে কমসংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে। ১০ এপ্রিল ছিল রাজ্যজুড়ে এই শিবিরে আবেদনের শেষদিন। তারপর সব জেলা থেকে পাওয়া হিসেব বলছে, কোথাও ১০টি তো কোথাও পাঁচটি আবেদন জমা পড়েছে। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পে সারা রাজ্যে মাত্র ১৪৪ জন আবেদন করেছেন। সেগুলি যাচাইও সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য আবেদন এত কম কেন? রাজ্যের শিক্ষাদফতরের কর্তাদের মতে, এর একাধিকBanks. কারণ হতে পারে। দুয়ারে সরকার শিবিরের বাইরে যাঁরা আগেই আবেদন করেছেন, তাঁদের অনেকেই এখনও ঋণ পাননি। ঋণ মঞ্জুরের ক্ষেত্রে রয়েছে ব্যাঙ্কের(Banks) তরফেও গড়িমসি থাকছে। নেওয়া হচ্ছে অনেক সময়। তাতে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ছেন। সে-কথা হয়তো নানাদিকে চাউর হয়েছে। তাই এই শিবিরে এগিয়ে আসেননি বহু পড়ুয়া।
আরও পড়ুন ‘বাবার দিল্লি যাত্রার পিছনে বড় টাকার খেলা রয়েছে’, দাবি শুভ্রাংশুর
এর বাইরেও দুটি মত উঠে আসছে। প্রথমটি হল, এই মুহূর্তে রাজ্যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি চলছে না। উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু না-হওয়া পর্যন্ত পড়ুয়ারা আবেদন করতে চাইছেন না। দ্বিতীয়টি হল, রাজনৈতিক কারণে একন্দ্রের শাসক দলের তরফে সরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে চাপ দেওয়া হচ্ছে যাতে এই প্রকল্পের পড়ুয়ারা ঋণ না পান। কেন্দ্র চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রকল্প ঘুরপথে বন্ধ করে দিতে। সেই সঙ্গে তাঁরা এটাও জনসমক্ষে তুলে ধরতে চাইছে যে মানুষ মমতার প্রকল্প থেকে মুখ ঘোরাচ্ছে। তবে Student Credit Card’র পাশাপাশি এবারের দুয়ারে সরকার শিবিরের মেধাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, শিল্পী ও তাঁতিদের ক্রেডিট কার্ডের জন্যও এক হাজারের নীচে আবেদন জমা পড়েছে সারা রাজ্যে।