এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

কর্মাধ্যক্ষ গ্রেফতার হবেন না কেন, প্রশ্ন মন্তেশ্বরে

নিজস্ব প্রতিনিধি: সামনা সামনি দুই বাড়ি। একটি বাড়ি কার্যত তিনমহলা, অন্যটি একতলা। একটি বাড়ির মালিক প্রায় কোটিপতি, অন্যটি অবশ্যি প্রায় দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের। অথচ সেই কোটিপতি পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেই উঠেছে সামনের বাড়ির এক যুবককে পিটিয়ে খুন করে দেওয়ার অভিযোগ। পুলিশ ইতিমধ্যেই সেই ঘটনার জেরে এক নাবালক সহ ৩জনকে গ্রেফতারও করেছে। যদিও তাতে এলাকাবাসীর ক্ষোভ থামেনি। বরঞ্চ তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন ওই ঘটনায় কেন ওই কোটিপতি পরিবারের মূল মাথাকে গ্রেফতার করছে না? তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ বলেই কী বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন? নাকি পুলিশ রাজনৈতিক চাপের কারণে তাঁকে গ্রেফতার করছে না। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য ইতিমধ্যেই কোমর বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতির ওই কর্মাধ্যক্ষকে গ্রেফতারির দাবি প্রসঙ্গে। আর যেহেতু সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন রয়েছে তাই এখন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও ওই নেতার থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিতে শুরু করে দিয়েছে।

জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdhwan) জেলার কালনা(Kalna) মহকুমার মন্তেশ্বর(Manteshwar) ব্লকের বাঘাসন পঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামে গত রবিবার মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের(Subrata Mukhopadhay) ভাই সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, ভাতৃবধূ পম্পা মুখোপাধ্যায় ও তাঁদের নাবালক ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশী যুবক জীবনকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়(৩৭)-কে(Jibankrishna Banerjee) পিটিয়ে মেরে ফেলার। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রবিবার সকালে সুকান্তরা তাদের বাড়ির দেওয়ালে কাদা ছোড়ার অপবাদ দিয়ে জীবনকৃষ্ণ ও তাঁর মা রেবা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গালিগালাজ করছিল। জীবনকৃষ্ণ তার প্রতিবাদ করে। তখন সুকান্ত, তার স্ত্রী, তাঁদের নাবালক ছেলে এবং সুব্রত এসে জীবনকৃষ্ণের বুকে-পেটে লাথি মারতে থাকে। বাঁশ ও উইকেট দিয়েও বেড়ধর মারধর করা হয় তাঁকে। ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না জীবনকৃষ্ণের দাদা অজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রামবাসীরাই জীবনকৃষ্ণকে উদ্ধার করে মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে, জীবনকৃষ্ণকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর থেকে তাঁর রক্ত-বমি শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সন্ধ্যা নাগাদ তাঁকে মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।  

তার জেরেই মঙ্গলবার রাতেই মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ সুব্রত মুখোপাধ্যায় সহ তাঁর ভাই সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, ভাতৃবধূ পম্পা মুখোপাধ্যায় ও তাঁদের নাবালক ছেলের বিরুদ্ধে মন্তেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অজয়বাবু। সেই অভিযোগের জেরেই সেদিন রাতেই গ্রেফতার হন সুকান্ত, তাঁর স্ত্রী ও তাঁদের নাবালক ছেলে। বুধবার ৩জনকে কালনা মহলুমা আদালতে তোলা হয়। সেখানে বিচারক সুকান্তের ৫ দিনের পুলিশ হেফাজত এবং পম্পাকে ১৭ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠান। তাঁদের নাবালক সন্তানকে বর্ধমান জুভেনাইল আদালতে তোলা হয়। তাকে ১৭ জুন পর্যন্ত আড়িয়াদহ সরকারি হোমে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও গ্রেফতার হননি সুব্রত। আর তাতেই ক্ষোভ ছড়াচ্ছে মন্তেশ্বরে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সুব্রত নিজেও মারধর করেন জীবনকৃষ্ণকে। সেই মারেই মারা গিয়েছেন জীবনকৃষ্ণ। সুকান্ত, তাঁর স্ত্রী ও তাদের ছেলে গ্রেফতার হলে সুব্রত কেন গ্রেফতার হবেন না? তিনি মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ বলেই কী পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করছে না!

যদিও সুব্রত নিজে জানিয়েছেন, ‘জীবনকৃষ্ণ মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। সে জন্য বর্ধমানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। যখন-তখন আমার পরিবারের লোকেদের উনি গালিগালাজ করতেন। কয়েক দিন আগে, এ নিয়ে ভাইপোর সঙ্গে তাঁর অশান্তি হয়। ভাই ও ভাইয়ের বউ তাদের অশান্তি ছাড়াতে যায়। মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আমি বর্তমানে ওই বাড়িতে থাকি না। অশান্তির সময়ে আমি গ্রামের বাইরে ছিলাম। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।’ কিন্তু সুব্রত’র এই দাবি মানতে নারাজ গ্রামবাসী থেকে অজয়বাবু ও তাঁর দিদি ও মা। তাঁদের দাবি, ‘সুকান্ত ও সুব্রতদের চার জনের মারের কারণেই জীবনকৃষ্ণের মৃত্যু হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে নির্মম ভাবে মারধর করায় ছেলেটা মারা গেল! দোষীদের শাস্তি চাই। কয়েক বছর আগে জীবনের মানসিক সমস্যা থাকলেও চিকিৎসা সুস্থ হয়ে গিয়েছিল।’ ঘটনার পর থেকেই তৃণমূলের তরফে সুব্রতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে মন্তেশ্বরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি আজিজুল হক জানিয়েছেন, ‘সুব্রতর পরিবারের বিরুদ্ধে কেন ওই অভিযোগ উঠেছে, আমরা খতিয়ে দেখছি। সুব্রত নিজে এই ঘটনায় অভিযুক্ত এই কথাও আমাদের কানে এসেছে। সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন আইনের পথে চলবে। অভিযুক্তদের রেয়াত করা হবে না।’

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

বাগদোগরা বিমানবন্দরে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তুলে দেবকে জড়িয়ে ধরলেন যুবক

‘জয় শ্রীরাম’র কী মহিমা, যুবককে জড়িয়ে ধরলেন দেব

মিলছে না খোঁজ, শাহজানের ভাই সিরাজুদ্দিন শেখের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস ইডির

প্রথম দফার ভোটে ৩ আসনে আসনে মতুয়া ও নমঃশূদ্র ভোট বিজেপি পায়নি

শুভেন্দু আগ বাড়িয়ে মন্তব্য না করলেই পারতেন, মানছেন পদ্ম নেতারাও

শিলিগুড়িতে বিজেপি নেতার গাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর