নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর(Paresh Chandra Adhikari) মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল যে তাঁকে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। সেই নিয়োগে দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। কলকাতা হাইকোর্ট সেই মামলায় অঙ্কিতার নিয়োগে ত্রুটি খুঁজে পায় ও তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। এমনি বিগত চার বছর ধরে যে মাইনে অঙ্কিতা পেয়েছিল তাও জুন ও জুলাই মাসে ২টি কিস্তির মাধ্যমে জমা করার নির্দেশ দেয়। সেই ঘটনায় সিবিআই-ও তদন্ত করছে। এমনকি পরেশকে সেই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অঙ্কিতার চাকরি পাওয়ার সঙ্গে পরেশের সরাসরি কোনও যোগ মেলেনি। কিন্তু সেই পরেশকেই এখন বলে বলে গোল দিচ্ছেন তৃণমূলেরই এক নেতা। কেননা এই নেতার বাড়ির ৪জন সদস্য ইতিমধ্যেই প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। আরও ৪জন সদস্য প্যানেলে নাম তুলে অপেক্ষা করছেন। যে তৃণমূল নেতার বাড়িতে এহেন ঘটনা ঘটেছে তিনি হলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের(Paschim Midnapur) গড়বেতার(Garbeta) তৃণমূলের(TMC) যুব নেতা সাগর মণ্ডল(Sagar Mondol)।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাগর মণ্ডলের পরিবারের ৪ জন ২০১৪ সালের টেটে নিয়োগ পেয়েছেন। আরও ৪ জনের ২০১৭র টেটের মেধাতালিকায় নাম রয়েছে। গড়বেতা-৩ নম্বর ব্লকের যুব নেতা সাগর মণ্ডল স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। এমনকী রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে প্রচুর চাকরি বিক্রি করেছেন সাগর। সেই সুবাদেই সাগরের দিদি, ২ খুড়তুতো ভাই ও বউমা ২০১৪ সালে টেট পাশ করে ২০১৭ সালে নিয়োগ পেয়েছে। এর পর ২০১৭ সালের টেটের মেধাতালিকায় নাম বেরোয় সাগর মণ্ডলের স্ত্রী, ভাইয়ের স্ত্রী, ভাগ্নে ও ভাগ্নের স্ত্রীর। তবে আদালতের নির্দেশে নিয়োগপ্রক্রিয়া স্থগিত থাকায় তাঁরা এখনও নিয়োগ পাননি। পরেশ একা নিজের মেয়ের চাকরি করে দিয়েছিলেন কিনা তা এখনও প্রমাণিত হয়নি। তবুও তিনি কার্যত জনতার কাঠগড়ায়। রাজ্যের শাসক দলও তাঁকে আপ্রাণ এড়িয়ে চলেছে। কিন্তু সাগর তো মহাসাগর হয়ে গিয়েছে। পরেশ তো সেখানে কচি খোকা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন মেটা ডহর বোর্ড প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করেন সাগর মণ্ডলের দিদি রুমা মণ্ডল ও খুড়তুতো ভাই শ্যামল মণ্ডল। আরও এক খুড়তুতো ভাই অমল মণ্ডল ভেলায়া প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করেন। অমল মণ্ডলের স্ত্রী সাগরবাবুর ভ্রাতৃবধূ মধুমিতা চন্দ দলদলি প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করেন। এছাড়াও মেধাতালিকায় নাম রয়েছে সাগরবাবুর স্ত্রী মুনমুন ঘোষ, ভ্রাতৃবধূ প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল, দিদি রুমা মণ্ডলের ছেলে সৌরভ ঘোষ ও সৌরভের স্ত্রী পায়েল সাঁইয়ের নাম। প্রাথমিকে নিয়োগে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই সাগরবাবুর মোবাইল ফোন বন্ধ।