নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা পেয়েছে রবীন্দ্রস্মৃতিধন্য শান্তিনিকেতন। গত রবিবার UNESCO’র তরফে শান্তিনিকেতনকে World Heritage হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে বেশ খুশি শান্তিনিকেতনের আশ্রমিকেরা। কিন্তু সেই খুশির পাশাপাশি তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন খোয়াই ও কোপাই নিয়েও। তাঁদের প্রশ্ন কেন খোয়াই ও কোপাইকেও এই ঐতিহ্যের শরিক করা হল না? যদি তা করা হতো তাহলে শান্তিনিকেতন ও রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত এই দুই প্রাকৃতিক সম্পদও ‘বেঁচে যেত’। হ্যাঁ ‘বেঁচে যেত’ শব্দটাই তাঁরা এখন ব্যবহার করছেন। কেননা আশ্রমিকদের পাশাপাশি রাজ্যের পরিবেশবিদ ও রবীন্দ্রপ্রেমিকদেরও দাবি, প্রকৃতির এই দুই জিনিস এখন নিত্যদিন খুন হচ্ছে মানুষের হাতে। কার্যত মানুষের হাত ধরে চিরতরে শান্তিনিকেতন থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে এই দুই প্রাকৃতিক সম্পদ।
বোলপুরের স্থানীয় বাসিন্দা ও শান্তিনিকেতনবাসীদের একাংশের দাবি, বছরের বেশির ভাগ সময়ে পায়ের পাতা ডোবে না কোপাইয়ে। নদীটি এখন মজে যাওয়ার পথে। যথেচ্ছ কংক্রিটের নির্মাণ আর ইটভাটার দাপটে হারিয়ে গিয়েছে নদীর তীরবর্তী পরিবেশ। খোয়াইয়ের তো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই ভার। এই দু’টিই যে-ভাবে ধ্বংস হচ্ছে, তাতে করে এখনই এই দুই প্রাকৃতিক সম্পদকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া গেলে কোপাই আর খোয়াই শান্তিনিকেতনের মানচিত্র থেকেই মুছে যাবে। তাঁদের দাবি, বাম জমানায় শান্তিনিকেতন শ্রীনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের মাধ্যমে খোয়াই ধ্বংস করে শুরু হয় কংক্রিটের জঙ্গল গড়ার কাজ। কিন্তু সেই অবৈধ নির্মাণ নিয়ে সেই সময় স্থানীয় কেউ ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। তাঁদের আশা ছিল UNESCO’র তরফে শান্তিনিকেতনকে World Heritage হিসাবে ঘোষণা করা হলে এই দুই প্রাকৃতিক সম্পদও হয়তো রক্ষা পেত। কিন্তু তা না হওয়ায় এখন তাঁদের ভয় এই দুই সম্পদই না হারিয়ে যায়।