নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার অন্যতম সেরা সরকারি হাসপাতাল হল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল(SSKM Hospital) যা অনেকেই পিজি হাসপাতাল নামেও চেনেন। সেই হাসপাতালের মুকুটেই উঠল নয়া পালক। পূর্ব ভারতের মধ্যেই এই হাসপাতালই সর্বপ্রথম পেয়ে গেল মরণোত্তর হাত প্রতিস্থাপন(Posthumous Hand Transplantation) করার অধিকার। পূর্ব ভারতের প্রথম হাসপাতাল হিসেবে হাত প্রতিস্থাপনের লাইসেন্স পেয়ে গিয়েছে এই হাসপাতাল। তাই এবার থেকে এই হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি(Plastic Surgery) বিভাগ মরণোত্তর হাত প্রতিস্থাপন করতে পারবে। এই পরিষেবা দেশে হাতেগোনা কিছু হাসপাতালে মেলে। এ বার থেকে সেই পরিষেবা মিলবে বাংলার(Bengal) বুকেও। সব থেকে বড় কথা যেহেতু এই হাসপাতাল সরকারি তাই স্বাস্থ্যসাথীর(Sasthasathi) আওতায় থাকা এ রাজ্যের বাসিন্দারাও বিনামূল্যে এই পরিষেবা পাবেন এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে। দেশের অন্যব কোনও বেসরকারি হাসপাতালে হাতের মরণোত্তর হাত প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়। কিন্তু বাংলার বুকে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় থাকা বাসিন্দারা এই পরিষবা পাবেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
আরও পড়ুন কেন্দ্রের ‘রিভার সিটিজ অ্যালায়েন্স’ কর্মসূচিতে বাংলার আরও ২৫ শহর
এসএসকেএম হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, মরণোত্তর হাত প্রতিস্থাপনে প্রশিক্ষিত পিজির চিকিৎসকেরা একেবারে প্রস্তুত। ব্রেন ডেথ হওয়া কোনও ব্যক্তির পরিবার হাতের মতো অঙ্গ দানে সম্মতি দিলে এবং প্রস্তাবিত গ্রহীতার সঙ্গে মৃতের রক্তের গ্রুপ ও লিম্ফোসাইট মিললে সম্ভব হবে রাজ্য তথা পূর্বাঞ্চলের প্রথম হাত প্রতিস্থাপন। যাঁদের হাত মসৃণ ভাবে কেটে যায় বা পুড়ে যায়, তাঁদেরই প্রতিস্থাপিত হাতের প্রয়োজন পড়ে। এসএসকেএমের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে এমনই চারজন রোগী এখন চিকিৎসাধীন। এখন তাঁদের জন্যই মরনোত্তর হাত প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় দাতার সন্ধান শুরু করে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য মরণোত্তর অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মতো হলেও হাত অভ্যন্তরীণ অঙ্গ নয়। প্রতিস্থাপনের জন্য তুলে নেওয়ার পর শবের কাটা হাত চোখে পড়ে সহজে। তাই পরিবারের থেকে সম্মতি আদায় তুলনায় কঠিন হতে পারে এক্ষেত্রে। তাই সচেতনতা বৃদ্ধিতেই আপাতত জোর দিচ্ছেন এসএসকেএমের কর্তৃপক্ষ। এখন দেখার বিষয় এক্ষেত্রে বাংলার মানুষজন কতটা এগিয়ে এসে নজীর গড়তে পারেন।
আরও পড়ুন আসানসোলের ঘটনার জন্য দায়ী শুভেন্দু, দাবি দিলীপের
বাংলার বুকে অনেক সময়েই দেখা যায় কোনও দুর্ঘটনা বা বিস্ফোরণের ঘটনায় কারও হাত কাটা পড়েছে বা উড়ে গিয়েছে। এতদিন তাঁদের হাত বাদ দিয়েই বেঁচে থাকতে হত। কিন্তু এবার থেকে সময়মতো দাতার সন্ধান পাওয়া গেলে এই মানুষগুলিই আবারও নতুন হাত পেয়ে যাবেন। দাতার শরীর থেকে হাত কেটে তা জুড়ে দেওয়া হবে প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে হাত হারানো ব্যক্তির শরীরে। সেই অপারেশন সফল হলেই তার কয়েক দিনের মধ্যেই সেই হাত সফল ভাবে ব্যবহার করতে পারবেন গ্রহীতা। এই ধরনের অপারেশনের ক্ষেত্রে সময় মতো দাতা ও গ্রহীতা পাওয়া খুব কঠিন। তার থেকেও কঠিন প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার এই অপারেশনের ব্যয়ভার বহণ করা। কিন্তু এবার থেকে সেই অপারেশনের সুবিধাই বিনামূল্যে নিতে পারবেন বাংলার মানুষেরা আর সেটাও এসএসকেএম হাসপাতালে।