নিজস্ব প্রতিনিধি: মাঝ রাতেই ধরা পড়েছে সুপারি কিলার। কার্যত কাউন্সিলরকে খুন করার উদ্দেশ্য নিয়েই তাকে এলাকায় আনা হয়েছিল। কিন্তু এনেছিল কে? এই প্রশ্নের পিছনেই এখন ছুটে চলেছে পুলিশ। রবিবার ভর সন্ধ্যায় দুষ্কৃতীর গুলিতে প্রাণ গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার ব্যারাকপুর মহকুমার পানিহাটি(Panihati) পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল(TMC) কাউন্সিলর অনুপম দত্তের(Anupam Dutta)। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। কার্যত ওই কাউন্সিলরকে ফলো করে পায়ে হেঁটে এসে খুব কাছ থেকে তাঁকে মাথায় গুলি(Shootout) করে ওই দুষ্কৃতী। তারপর পায়ে হেঁটে গা ঢাকা দিলেও এলাকা ছাড়তে পারেনি সে। মাঝরাতেই সে এলাকার একটি হোগলা বনে স্থানীয় বাসিন্দার হাতে ধরা পড়ে যায়। সোমবার দুপুরে তাকে ব্যারাকপুর(Barracpur) মহকুমা আদালতে পেশ করতে চলেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, রবিবার অনুপমবাবুকে খুনের পর এলাকায় তদন্তে যায় পুলিশ। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাঁরা সেই সময় এলাকার সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করেন। তার জেরেই যেমন নীল ডোরাকাটা গেঞ্জি পরা দুষ্কৃতীকে কার্যত পায়ে হেঁটে এসে অনুপমবাবুকে গুলি করার ফুটেজ যেমন সামনে এসেছে তেমনি পুলিশ এটাও নিশ্চিত হয়েছিল ওই দুষ্কৃতী এলাকা ছেড়ে যেতে পারেনি। এলাকাতেই সেই কোথাও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। আর তার জেরেই রবিবার রাতেই শুরু হয় এলাকায় চিরুনি তল্লাশি। সেই সময়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। এরপরই তেঁতুলতলা এলাকা থেকে ধরা পড়ে ওই দুষ্কৃতী। তেঁতুলতলা এলাকার একটি হোগলা বনে লুকিয়ে ছিল সে। স্থানীয় বাসিন্দারা সেই বনে আগুন লাগিয়ে দিলে সে বাধ্য হয় বেড়িয়ে আসতে। আর তখনই তাকে ধরে উত্তমমধ্যম দিয়ে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
রাতেই পুলিশ ওই দুষ্কৃতীকে জেরা করা শুরু করে পুলিশ। আর তাতেই জানা যায়, তার নাম শম্ভুনাথ পণ্ডিত ওরফে অমিত। বাড়ি নদিয়া জেলার হরিণঘাটায়। তাকে এদিনই ব্যারাকপুর মহকুমা আদলতে তুলছে পুলিশ। ঘটনার জেরে তৃণমূলের অভিযোগ, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জেতার লক্ষ্য নিয়ে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংই এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াতে এইসব ঘটনা ঘটাচ্ছেন। যদিও অর্জুনের পালটা অভিযোগ, তৃণমূলের অন্দরে এখন গৃহযুদ্ধ লেগেছে। এই ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ। এ বিষয়ে পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষ জানিয়েছেন, ‘তরতাজা যুবক সদ্য নির্বাচনে জিতেছিলেন। তাঁকে খুন করার পিছনে বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে। ভাড়া করা খুনিদের দিয়ে খুন করানো হয়েছে। একশো শতাংশ পরিকল্পিত খুন৷ বাইকে চেপে তিন দুষ্কৃতী তাঁকে গুলি করে বলে জানতে পেরেছি৷ একজন ধরা পড়েছে, বাকিরা কোথায়! কিন্তু কী কারণে, কে বা কারা গুলি চালিয়েছে সে বিষয়ে জানি না৷ কী বলব বুঝে উঠতে পারছি না৷ পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখছে৷ পুলিসশকে জানিয়েছি৷ প্রশাসনের উপর বিশ্বাস-ভরসা আছে৷ কে বা কারা ঘটিয়েছে তা বলা সম্ভব নয়৷ তবে, অনুপম এলাকার বিজেপির বড় মাথাকে হারিয়ে ছিল।’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অমিত পেশায় ভাড়াটে খুনি। অনুপমবাবুকে খুন করার জন্যই তাকে এলাকায় আনা হয়েছিল। কিন্তু এনেছিল কে? কেনই বা অনুপমবাবুকে খুন করা হল সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার এখন চেষ্টা করছে পুলিশ। অমিতের কাছ থেকে পুলিশ একটি আগ্নেয়াস্ত্র, সিম ছাড়া একটি মোবাইল এবং ট্রেনের রিটার্ন টিকিট পেয়েছে পুলিশ।