নিজস্ব প্রতিনিধি: রীতিমতো আঁটঘাঁট বেঁধে আসরে নেমেও শেষরক্ষা আর হল না। পুলিশের জালে ধরা পড়েই গেল ৪ যুবক। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই চাঞ্চল্য ছড়াল রাজ্যের রেল শহর খড়গপুরের(Kharagpur) বুকে। কেননা এই ৪জন রেল শহরে বসে খড়গপুর আইআইটি(IIT)-র নাম করে চাকরির ক্ষেত্রে জালিয়াতির ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছিলেন। আইআইটি-তে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তারা কারও কাছ থেকে ৩ লক্ষ, কারও কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছিল। এদিন অবশ্য ৪ জনকেই ধরা পড়তে হল পুলিশের হাতে। এই জালিয়াতি চক্রের মূল পাণ্ডা ভিকি হাজারি। তাকে পুলিশ(Police) গত শনিবার উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে গ্রেফতার(Arrest) করে। রবিবার তাকে আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলা হয়। তারপর ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে সোমবার আনা হয় খড়গপুরে। আর তাকে জেরা করেই এদিন খড়গপুর থেকে ৪জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ঠিক কী হয়েছে? ভিকি হাজারি খড়গপুরের ৪জনকে সঙ্গে নিয়ে এই জালিয়াতি চক্রের সূচনা ঘটিয়েছিল। খড়গপুর আইআইটি চত্বরেই রয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ। এই সংস্থাটি আদতে একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। সেখানেই নাম মেডিকেল টেকনোলজি ল্যাবরেটরি আ্যসিস্টেন্ট এবং সিকিউরিটি গার্ড পদে লোক নেওয়ার কাজ শুরু করেছিল এই ৫জন। ভিকি ছাড়াও এই চক্রে ছিল খড়গপুর শহরের ইন্দা এলাকার বিদ্যাসাগরপুরের বাসিন্দা রবিশঙ্কর দাস, হিজলী কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাগর রাউত, তালবাগিচা এলাকার অভিজিৎ দাস এবং খড়গপুর গ্রামীণ থানার চামরুসাইয়ের বাসিন্দা তপনজ্যোতি মান্না। এরা টাকার বিনিময় বেকার যুবকদের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছিল। তারা বেকার যুবকদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিল চাকরিতে যোগদানের পরেই মিলবে প্রতি মাসে ১৭ হাজার টাকা বেতন। ৬ মাস পরই সেই বেতন হয়ে যাবে ২৪ হাজার টাকা। সঙ্গে মিলবে আরও বেশ কিছু সযোগ সুবিধা। সেই সঙ্গে চাকরিও পাকা হয়ে যাবে।
এই সব কথা যাতে বেকার যুবকেরা বিশ্বাস করে তার জন্য চাকরিপ্রার্থীদের তারা খড়গপুর আইআইটি ক্যাম্পাসে ডেকে ইন্টারভিউ দেওয়া করায়। তারপর মেডিকেল টেস্টের পর চাকরিপ্রার্থীদের হাতে তুলে দিয়েছিল আ্যপয়েন্টমেন্ট লেটার। তাতে লেখা ছিল চাকরির পরে প্রথম ৬ মাস হবে প্রবেশনাল পিরিয়ড। সেই সময়েই মাসে মাসে ১৭ হাজারের বেতন মিলবে। কিন্তু ঘটনা হল এই চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে থেকে ৮জন এসেছিল উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও মালদা থেকে। তারা খড়গপুর শহরের ইন্দা এলাকায় আশির্বাদ লজে উঠেছিল। সেখানেই ভিকির উপস্থিতিতে এই ৮জনের সঙ্গে এই চক্রের ডিল হয় যে মেডিকেল টেকনোলজি ল্যাবরেটরি আ্যসিস্টেন্ট পদের জন্য ৫ লক্ষ টাকা এবং সিকিউরিটি গার্ডের পদের জন্য ৩ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। কিন্তু ওই লজের সিসিটিভিতে ঘটনাটি দেখতে পান লজের মালিক। তাঁর বিষয়টি সন্দেহজনক লাগায় তিনি খবর দেন খড়গপুর টাউন থানার পুলিশকে। তারপরেই মাঠে নামে পুলিশ। ধরা পড়ে ভিকি সহ মোট ৫জন।