নিজস্ব প্রতিনিধি: কথা ছিল নেতাইয়ে গিয়ে তিনি শহীদবেদীতে মালা দিয়ে সভা করবেন। আর সেই সভা থেকেই তিনি আক্রমণ শানবেন রাজ্য সরকার ও তৃণমূলকে। কিন্তু তাঁর সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিল পুলিশ। মাঝ রাস্তাতেই তাঁর কনভয় আটকে তাঁকে ফেরত পাঠাল পুলিশ। আর তার জেরেই সভার পরিবর্তে মিছিল করলেন তিনি। নজরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ২০১১ সালের এই দিনেই লালগড়ের নেতাই গ্রামে সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন নেতাই গ্রামের ৯জন বাসিন্দা। আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন। সেই থেকে প্রতি বছর নেতাই দিবস পালন করা হয় এই দিনে। শুক্রবার সেই মর্মান্তিক ঘটনার ১০ বছর পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষ্যেই সেখানে শুভেন্দু অধিকারীর একটি সভা করার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশের পদক্ষেপে সেই সভা এদিন বানচাল হয়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, এদিন দুপুর ৩টে নাগাদ শুভেন্দুর কনভয় নেতাইয়ে যাওয়ার জন্য বিনপুর হয়ে ঝিটিকার জঙ্গলের দিকে যেতেই সেই কনভয়কে আটকে দেয় পুলিশ। এরপরেই পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন শুভেন্দু। কিন্তু আগে থেকেই সেখানে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকায় বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা কিছুই করে উঠতে পারেনি। বাধ্য হয়ে শুভেন্দু বিনপুরে ফিরে এসে সেখানে মিছিল করেন। ঝিটিকার জঙ্গলে পুলিশ যখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কনভয় আটকে দেয় তখন বেশ কয়েকবারই শুভেন্দুকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘উচ্চ আদালতই আমায় নেতাই যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। আদালতই বলেছে, বাংলার যে কোনও জায়গায় যাওয়ার অধিকার রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। তার জন্য রাজ্যকে নিরাপত্তাও দিতে বলেছে। কিন্তু আপনারা আমাকে নির্দিষ্ট সময় দেননি। যদি কোনও সমস্যা থাকত, আগেই জানাতে পারতেন।’ যদিও পুলিশ থেকেও এটা জানানো হয়নি যে শুভেন্দুকে ঠিক কেন নেতাই যেতে দেওয়া হয়নি।
যদিও বিজেপির অভিযোগ, নেতাইয়ে এদিন তৃণমূলের একটি সভা ছিল। সেই কারনেই পরিকল্পনা করেই শুভেন্দুকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। তবে এ বিষয়ে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘যে হেতু গ্রামে আর একটি অনুষ্ঠান চলছিল, তাই ওঁকে একটু অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু উনি অপেক্ষা না করেই চলে গিয়েছেন। আর যাঁরা গ্রামে আগে থেকেই ওখানে অনুষ্ঠান করছেন, তাঁদেরও তাড়াতাড়ি অনুষ্ঠান শেষ করতে বলা হয়েছে।’ শুভেন্দুর অবশ্য অভিযোগ, ‘তৃণমূলের ঘোষিত অনুষ্ঠান ছিল সকাল ১০টায়। নন্দীগ্রামের অনুষ্ঠান করে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দুপুর ৩টে নাগাদ এলাম। তার পরেও আমায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশ উচ্চ আদালতকেও মানছেস না।’ ঘটনার জেরে তৃণমূলের বিনপুর ১ ব্লক সভাপতি শ্যামল মাহাত জানিয়েছেন, ‘সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নেতাই গ্রামে শহিদ দিবস পালন কর্মসূচি রয়েছে। পুলিশের অনুমতি নিয়েই শুরু হয়েছে অনুষ্ঠান। শুভেন্দু অধিকারীকে কেন পুলিশ আটকেছে, তা প্রশাসন বলতে পারবে। তৃণমূলের কেউ আটকায়নি।’