নিজস্ব প্রতিনিধি: গুরু আগেই জেলে গিয়েছেন। এবার কী শিষ্যও? গুরুকে আগেই ঝেড়ে ফেলে দিয়েছে দল। এবার পালা কী শিষ্যের? প্রশ্ন ঘুরছে ভাঙড়ে(Bhangar)। কেননা নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় জেলবন্দী তৃণমূলের(TMC) প্রাক্তন মহাসচিব তথা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের(Partha Chattopadhay) ‘চ্যালা’ ভাঙড়ের দাপুটে নেতা তথা প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আরাবুল ইসলামের(Aarabul Islam) বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ গ্রহণ করেছে খোদ রাজ্য পুলিশ। ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা, শাসক দল এবং রাজ্য সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত না থাকলে কখনই এটা সম্ভব হতো না। দুই তরফেই সবুজ সঙ্কেত আসতেই এবার তাই ISF কর্মীকে খুনের দায়ে আরাবুল ইসলাম এবং তাঁর পুত্র হাকিমুলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করল খোদ পুলিশ। আর সেই অভিযোগ দায়ের হল ভাঙড়েরই কাশীপুর থানায়। আর এইসব দেখে এখন অনেকেই মনে করছেন, খুব শীঘ্রই তৃণমূল Closed Chapter হতে চলেছে আরাবুল অধ্যায়।
আরও পড়ুন সাড়া দেননি শাহ, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টে নওশাদ
রাজ্যের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে অশান্তির জেরে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে ভাঙড়। তৃণমূল এবং আইএসএফের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ISF কর্মীমহম্মদ মহিউদ্দিন মোল্লা। আইএসএফ নেতৃত্বের দাবি, মহিউদ্দিন তাঁদের কর্মী। গুলিবিদ্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয় গত ১৫ জুন। মহিউদ্দিনের বাবা কুতুবুদ্দিন মোল্লা রবিবার রাতে কাশীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে খুন, খুনের চেষ্টার মতো একাধিক জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অস্ত্র আইনেও মামলা হয়েছে। আরাবুল ইসলাম এবং তাঁর পুত্র হাকিমুলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ সহ মোট ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ভাঙড়ে অশান্তির ঘটনায় এই নিয়ে মোট সাতটি মামলা রুজু করা হল। এর আগে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পুলিশ ৩টি মামলা রুজু করেছিল। তৃণমূলের তরফে মামলা হয় দু’টি। এ ছাড়া, সংবাদমাধ্যমের অভিযোগের ভিত্তিতে আরও একটি মামলা রুজু করা হয়েছিল। তার পর আইএসএফ কর্মীর খুনের অভিযোগে সপ্তম মামলাটি রুজু হল।
আরও পড়ুন বাংলার ২৮ হাজার মানুষ পাচ্ছেন না পেনশন
যদিও এদিন আরাবুল এই ঘটনার প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘আমি বা আমার ছেলে এই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নই। আমরা বিডিও অফিসের সামনে ছিলাম। আমার মনে হয়, আইএসএফের লোকেরা গুলি চালাচ্ছিল। সেই গুলিই মহিউদ্দিনের গায়ে লেগেছে। আমাদেরও দু’জন মারা গিয়েছেন।’ যদিও আরাবুলের এই দাবি কতজন বিশ্বাস করবেন তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ আছে। কিন্তু পুলিশ আরাবুল ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করায় এখন অনেকেই মনে করছেন তৃণমূলে কার্যত আরাবুলকে ঝেড়ে ফেলার পর্ব শুরু হয়ে গেল। তৃণমূলে আরাবুল অধ্যায় কার্যত খুব শীঘ্রই ইতিহাস হয়ে যেতে চলেছে।