নিজস্ব প্রতিনিধি: পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের(Ketugram) গৃহবধূ রেণু খাতুন(Renu Khatun) প্রেম করে বিয়ে সেরে ঘর বেঁধেছিলেন শেখ শরিফুল(Seikh Shariful) ওরফে সিরাজের সঙ্গে। তখন তিনি জানতেনও না এই শরিফুল তাঁর জীবনে কত বড় বিপদ হয়ে দাঁড়াবেন। নার্সিংয়ে চাকরি পাওয়া রেণু যাতে কাজে যোগ দিতে না পারেন তার জন্য নিজের বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে রেণুর ডান হাত কেটে দিতে পিছুপা হয়নি সেই শয়তান। কার্যত গোটা বাংলা শিউরে উঠেছিল এহেন ঘটনায়। তবে রেণুর এই দুর্দিনে তাঁর পাশে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। কার্যত তাঁর নির্দেশে নার্সিংয়ের চাকরিতে যোগ দেন রেণু। শুধু তাই নয়, তাঁর নির্দেশে এবার পূর্ব বর্ধমান(Purba burdhwan) জেলার জেলা পরিষদের তরফে রেণুকে কৃত্রিম হাত দেওয়াও হচ্ছে। কিন্তু এরই মাঝে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে রেণুর নিরাপত্তা। কেননা তাঁর হাত কেটে দেওয়ার ঘটনার মূল অপরাধী তাঁর স্বামী শেখ শরিফুল গত বৃহস্পতিবার ৪০ হাজার টাকার বন্ডে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছে। তার সঙ্গে জামিন পেয়েছে ঘটনার আরও দুই অভিযুক্ত যারা শরিফুলেরই বন্ধু। এই ঘটনার জেরে এখন আতঙ্কে পড়ে গিয়েছেন রেণু।
পূর্ব বর্ধমান জেলার সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কৃত্রিম হাত লাগানো হবে রেণুর শরীরে। তিনি জানিয়েছেন, ‘রেণুর লড়াইকে কুর্ণিশ জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ অনেকেই তাঁর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রেণুকে সরকারি চাকরিও দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তার ডান হাত নিয়েই সমস্যা, তাই তাঁর নানাবিধ অসুবিধায় হচ্ছিল। সেই জন্য কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ এই ঘটনা ও ঘোষণায় খুশি রেণু। কিন্তু তাঁর চিন্তা স্বামী ও তার দুই বন্ধুর জামিন পেয়ে যাওয়ার ঘটনাটি। রেণুর ভয়, এবার তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলতে না চড়াও হয় ওই ৩জন।
রেণু জানিয়েছেন, ‘সকলকে আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। কৃত্রিম হাত দেওয়ার ফলে আগামীদিনে আমার কাজ করতে অনেক সুবিধা হবে। কিন্তু ওরা ছাড়া পাওয়ায় আমার ভয় হচ্ছে, আমার ওপর হামলা করা হতে পারে। অভিযুক্তদের আটক রেখে যদি বিচারের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে ভাল হবে। ৩ জনেই জামিন পেয়েছে। আমি এখন ভয়ে রয়েছি। আবার যদি আমার ওপর হামলা চালায়। এবার আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করতে পারে। জামিন কী ভাবে পেয়েছে ঠিক বুঝতে পারছি না। হয়তো তদন্তে কোনও গাফিলতি থেকে যেতে পারে! এত বড়ো অপরাধ করার পরেও এত তাড়াতাড়ি ছাড় পেয়ে গেল! তবে আইনের ওপর আস্থা আছে। নিশ্চয়ই আইন তাদের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা নেবে। প্রশাসনকে বলব, যেন তাড়াতাড়ি তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়। মুখ্যমন্ত্রীর পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। অভিযুক্তদের হেফাজতে রেখেই শাস্তি দেবেন বলেছিলেন। কী ভাবে জামিন পেল জানি না। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, দোষীদের আটক রেখে বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। না হলে আমার জীবন সংশয় থাকছে।’