নিজস্ব প্রতিনিধি: উত্তরবঙ্গের(North Bengal) মাল শহরের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন তিনি। প্রশ্ন দেশের গণতন্ত্র নিয়ে। প্রশ্ন দেশে নারী সুরক্ষা নিয়ে। প্রশ্ন CAA-NRC নিয়ে। প্রশ্ন অভিন্ন আচরণবিধি নিয়ে। যদিও এই সব প্রশ্নের কোনও উত্তরই কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকারের কাছ থেকে পাওয়া যাবে না। তবুও তিনি বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে বাংলার মানুষকে বার বার সচেতন করে দিচ্ছেন, দেশের কায়েমী শক্তির স্বার্থ ও তা থেকে কোন কোন বিপদ ধেয়ে আসতে চলেছে তা নিয়ে। নজরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন তিনি জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নির্মল রায়ের সমর্থনে একটি সভা করেন মাল শহরে। আর সেই সভা থেকেই তিনি তাঁর উদ্বেগবার্তা তুলে ধরেন সকলের কাছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনা করার কথা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু সমস্যা হল, যার বিয়ে, তিনি নিজেই পুরোহিত। নিজেই স্বামী, নিজেই স্ত্রী। নির্বাচন কেন্দ্রের। রাজ্যের নয়। নির্বাচন করছে বিজেপি(BJP) পার্টি। কোথায় গণতন্ত্র? সারা পৃথিবীর দেখে রাখুন, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে ওয়ান নেশন, ওয়ান পার্টি চলতে পারে না। বিজেপি তা-ই করছে। বিজেপি আর নির্বাচন কমিশন এক হয়ে কাজ করছে। সে কারণেই নির্বাচনী আচরণবিধি মানে না বিজেপি। তার মধ্যে এনআরসি, ক্যা করছে। আপনি আবেদন করলেই আপনাকে ডিটেনশন শিবিরে রেখে দেবে, অসমের মতো। আমরা কেন্দ্রের দয়া চাই না। যারা টাকা দেয় না, তাঁদের টাকাও চাই না। আবাসের টাকা দেয় না। ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয় না। তাদের টাকা নেব না। দয়া চাই না। প্রশাসন দেবে। কিন্তু অনুমোদন পেতে এত সময় লাগছে কেন?’
এছাড়াও মমতা বলেন, ‘এদেশে যারা আছেন তাঁরা সকলেই নাগরিক। আমরা এনআরসি করতে দেব না। কারও অধিকার কাড়তে দেব না। যখনই আবেদন করবেন, লক্ষ্মীর ভান্ডার চলে যাব। আপনাকে দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া হবে, আপনি অনুপ্রবেশকারী। এনআরসির ভয়ে হুট করে কিছু করবেন না। আমি তো আছি। আমি দিল্লি থেকে এসে রাজনীতি করি না। মাটির লোক। এর পর শুনছি, দেশে অভিন্ন আচরণবিধি চালু হবে। হিন্দুদের, মুসলিমদের, রাজবংশী, জনজাতিদের বিয়ের পদ্ধতি আলাদা? কে কী ভাবে বিয়ে করবে, কোন শাড়ি পরবে? কী ভাবে পরবে? তা-ও ঠিক করে দেবে বিজেপি। মণিপুরে কী হয়েছে দেখেছেন তো! কী ভাবে মহিলাদের নগ্ন করে ধর্ষণ করা হয়েছে। গুজরাতে নির্যাতিতার ওপর অত্যাচার, কুস্তিগীর সাক্ষীর ওপর অত্যাচার দেখেননি? এই হচ্ছে বিজেপি। দলটাই ভাঁওতাবাজ। কোথায় দুর্নীতি হয়েছে, দেখাতে হবে, প্রমাণ করতে হবে। চার-পাঁচ জন নিয়ে সমস্যা ছিল। প্যানেল করে পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। কিন্তু আবাসের টাকা আসেনি কেন? ১০০ দিনের কাজের টাকা আসেনি কেন? অপেক্ষা কার জন্য? প্রধানমন্ত্রীর জন্য? টাকা তো তিনি দেবেন না। দেব আমরা। বলবে দাঙ্গা করো। খ্রিস্টানদের পুড়িয়ে দাও, যেমন মণিপুরে হয়েছে।’