নিজস্ব প্রতিনিধি: রেলমন্ত্রক বলছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমহণীতে বৃহস্পতিবার বিকালে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা মাত্র ৯। আহত মাত্র ৩৬জন। কিন্তু এদিন সকাল থেকেই অনেক পরিজনই তাঁদের নিকট আত্মীয় থেকে বন্ধুদের খুঁজে পাচ্ছেন না যারা ওই অভিশপ্ত ট্রেনে সফর করছিলেন। এদিন সকাল থেকেই তাঁরা হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন একের পর এক হাসপাতালে। উঁকি মারছেন মর্গেও। কিন্তু কোথাও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না। বেসরকারি মতে এই নিখোঁজদের সংখ্যা ৫০ এর ওপরে। যদিও রাজ্য প্রশাসন বা রেল মন্ত্রকের তরফে এখন সরকারি ভাবে এই বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। বরঞ্চ রেলের তরফে জানানো হয়েছে দুর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেনের ভেতরে আর কেউ আটকে নেই। উদ্ধারকার্যও শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন চলছে হাইড্রলিক ক্রেনের মাধ্যমে লাইন থেকে ছিটকে উল্টে পড়া কামরাগুলিকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ। কামরা সরানোর পাশাপাশি বেঁকে যাওয়া লাইন তুলে দিয়ে নতুন লাইন বসানোর কাজও শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের এই দুর্ঘটনার পর থেকে যারা নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন তাঁদের একটা অংশ যেমন এ রাজ্যের বাসিন্দা তেমনি রয়েছেন ভিন রাজ্যের বাসিন্দারাও। যেমন জয়পুরের কর্মস্থল থেকে কোচবিহারের বাড়ি ফিরছিলেন রঞ্জিত বর্মন। দুর্ঘটনার ১০ মিনিট আগেও তিনি কথা বলেছেন পরিবারের সঙ্গে। অথচ এদিন সকালে মৃত বা আহতদের মধ্যে তাঁর কোনও সন্ধানই পাননি তাঁর পরিজনেরা। কোচবিহারের সিঙিমারির এলাকার বাসিন্দা মঙ্গল রায়ও বাড়ি ফিরছিলেন এই ট্রেনে। কিন্তু দুর্ঘটনার পর থেকে তাঁরও আর কোনও সন্ধান মিলছে না। জলপাইগুড়ির বচ্চন ওরাঁওয়ের ভাই মঙ্গল ওরাঁও ওই অভিশপ্ত ট্রেনের যাত্রী হিসাবে সফর করছিলেন। এস ৫ কামরায় ছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ঘটনার পর থেকে তাঁর আর কোনও সন্ধানই মিলছে না।
এইরকম বেশ কিছু পরিবারের দাবি তাঁদের নিকটজনেরা ওই ট্রেনে সফর করছিলেন। কিন্তু দুর্ঘটনার পর থেকে তাঁদের আর কোনও খোঁজ মিলছে না। অনেকেই সরাসরি অভিযোগ তুলছেন গোটা দুর্ঘটনাকে ছোট করে দেখানোর জন্য এবং ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার মনোভাব থেকেই নিখোঁজদের বিষয়টি চেপে যাওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মৃতদেহ পাচার করে দেওয়াও হতে পারে বলে তাঁদের অভিযোগ।