এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

৪৪ বছর পার, আজও কেউ শাস্তি পায়নি মরিচঝাঁপি গণহত্যাকান্ডে

নিজস্ব প্রতিনিধি: দেখতে দেখতে ৪৪টা বছর পার হয়ে গেল। কিন্তু আজও জানা গেল না ১৯৭৯ সালের ৩১ জানুয়ারি সুন্দরবনের(Sundarban) সজনেখালি রেঞ্জের হ্যামিল্টন দ্বীপের মরিচঝাঁপিতে(Marichjhnapi) সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল। মানে ঠিক কতজন মানুষের মৃত্যু(Mass Killing) হয়েছিল, কতজন মহিলা গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন আর এইসবের জন্য ১জনও কেউ ধরা পড়েছিল কিনা। ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকার(Left Front Government) বেশ পরিণত মস্তিষ্কে সব কিছুই ধামাচাপা দিয়ে দিতে পেরেছিল। আজও তাই জানা যায় না সেদিন পুলিশের গুলিতে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছিল, কত মানুষের লাশ নদীতে ভেসে গিয়েছিল, হার্মাদের দল কত মহিলাকে গণধর্ষণ করেছিল। তবে সেই ঘটনার বিভৎসতা ঠিক কী হতে পারে তা বাংলার মানুষ বাম জমানার ৩৪ বছরে বেশ ভালই দেখেছেন। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, ধানতলা, বানতলা, সূচপুর, ছোট আঙারিয়া, তালিকাটা মুদির দোকানকেও হাস মানিয়ে দেবে। তাই রাজ্যের সরকারি খাতায় যে হিসাবেই দেওয়া থাক না কেন, যে কথাই লেখা থাকুক না কেন, লালপার্টির নেতারা যে কথাই দাবি করুক না কেন, তাতে বিশ্বাস নেই আমজনতার।

আরও পড়ুন ১ এপ্রিল থেকে অচল ৯ লক্ষ সরকারি গাড়ি

মধ্যপ্রদেশের দণ্ডকারণ্য থেকে বাঙালি উদ্বাস্তুদের চলে আসার ঢল অনেকদিন ধরেই চলছিল। ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যে ওই সব উদ্বাস্তু পরিবারের এক তৃতীয়াংশ রাজ্যে পালিয়ে আসে। সেই সময়কার সংবাদমাধ্যমের দাবি, প্রায় ৩০ হাজার মানুষ কার্যত নিজেদের উদ্যোগেই ওই মরিচঝাঁপি দ্বীপে গিয়ে বাঘের সঙ্গে লড়াই করে জঙ্গল কেটে বসতি গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু তৎকালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর(Jyoti Basu) নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার সেই মানুষগুলির কোনওরকম দায়ভার নিতে তো চায়নি উল্টে, তাঁদের তাড়াবার জনু উঠে পড়ে লেগেছিল। বিভিন্ন মহল থেকে সেই সময় অভিযোগ উঠেছিল, বামফ্রন্ট সরকার নৃশংসভাবে মরিচঝাঁপি থেকে উদ্বাস্তুদের তাড়িয়েছিল। যারা সেই হত্যাকাণ্ডের পরেও দীর্ঘদিন জীবিত ছিলেন তাঁরা নানা সংবাদমাধ্যমে বয়ান দিয়েছিলেন যে পুলিশ দিয়ে তাঁদের দ্বীপে অবরোধ করা হ্যেছিল যাতে তাঁরা পাশের গ্রামে গিয়ে খাবার কিনে আনতে না পারেন, খাবার জল জোগাড় করতে না পারেন, এমনকি ওষুধ সংগ্রহ করতেও না পারেন। সেই সঙ্গে পুলিশের তরফে থেকে নাকি চলেছিল হুমকি ধমকি যে ওই জায়গা ছেড়ে চলে না গেলে তাঁদের গুলি করে মারা হবে। এই সব দাবির কতখানি সত্যি আর কতখানি মিথ্যা তা আজও জানা যায়নি।

আরও পড়ুন বইমেলার জন্য করুণাময়ী থেকে বিশেষ বাস পরিষেবা চালু

মরিচঝাঁপি থেকে জীবিত বেঁচে আসা মানুষদের দাবি, প্রায় ৭-৮ মাস ধরে পুলিশ ও সিপিএমের গুন্ডাবাহিনী তাঁদের দ্বীপ ঘিরে থাকায় তাঁরা নিদারুণ কষ্টের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। খেতে না পেয়ে, অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে বহু মানুষ মারা গিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালের ৩১ জানুয়ারি দ্বীপের বাসিন্দারা মরিয়া হয়ে খাবার ও জল জোগাড়ে বেরিয়ে পড়ে। আর তার জেরেই তাঁদের সঙ্গে পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। পুলিশের গুলিতে সেদিন অনেকেরই মৃত্যু হয়। অভিযোগ শতাধিক মহিলা গণধর্ষণের শিকার হন। যদিও সেদিন পুলিশ ঠিক কত রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল তার হিসাব আজও মেলে না। খালি তখনকার অবিভক্ত ২৪ পরগনা জেলার পুলিশ সুপার অমিয় সামন্তের দাবি ছিল, উদ্বাস্তুদের ওপর কোথাও বলপ্রয়োগ করা হয়নি। পুলিশের গুলিতে মাত্র দু’জন মারা গিয়েছেন। সেই সময় ওই ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিস্তর লেখালেখিও হয়। কিন্তু কেউ কোনও শাস্তি পায়নি।

আরও পড়ুন কেন ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা আটকে, সামনে এল তথ্য

মরিচঝাপিতে অবশ্য সেটাই একমাত্র ঘটনা ছিল না। সেই ঘটনার পরে ওই দ্বীপে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের যাওয়ার ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। পুলিশ আর হার্মাদ বাহিনী তারপরেও ওই দ্বীপে অবরোধ চালিয়ে যায়। দিনের পর দিন ক্রমাগত প্ররোচনা দিয়ে উদ্বাস্তুদের উত্ত্যক্ত করে ক্ষুধায় তৃষ্ণায় তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশ, প্রশাসন আর হার্মাদরা। শেষে সেই বছরই ১৪ মে শুরু হয় চূড়ান্ত অপারেশন যা চলে ১৬ মে অবধি। অর্থাৎ ৩ দিন ধরে সেখানে অবাধে চলেছিল গণহত্যা আর গণধর্ষণের পালা। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীরা ১৯৭৯ সালের আগে পরে মরিচঝাঁপিতে গিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত করেছেন, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু রহস্য আজও কাটেনি। সিপিএম এখনও দাবি করে, মরিচঝাঁপিতে পুলিশের গুলিতে মাত্র দুজনের মৃত্যু হয়েছিল। এর বেশি আর কিছুই নাকি হয়নি। ৪৪ বছর পার। মরিচঝাঁপিতে কী হয়েছিল আর কী হয়নি বাংলা তার আন্দাজ পেয়ে গিয়েছে ৩৪ বছরের সন্ত্রাসের রাজত্বকালে।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ভিন রাজ্যের নিখোঁজ বৃদ্ধকে পরিবারের হাতে পৌঁছে দিল রানাঘাট পুলিশ

বারাসতের টাকি রোডে নার্সিংহোমে এক কিশোরীর রহস্যজনক মৃত্যু, তদন্তে পুলিশ

গঙ্গারামপুরে বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করল প্রশাসন

‘মিথ্যা অভিযোগ’, মামলা তুলে নিতে চান সন্দেশখালিতে ‘ধর্ষণের শিকার’ মহিলা

বুধবার শ্রীরামপুরে প্রচারে মুখোমুখি কল্যাণ- দীপ্সিতা, উঠলো স্লোগান, গাইলেন রবীন্দ্র সংগীত

রাণাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর হয়ে প্রচারে দেব

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর