নিজস্ব প্রতিনিধি: দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে খারাপ ভাবে ভেঙেছিল মহিলার কোমরের হাড়। ওই মহিলার কোমরের হাড়ের জটিল অস্ত্রোপচার করে সাফল্য পেল তমলুক জেলা হাসপাতাল।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুরের বাসিন্দা সরস্বতী জানা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গুরুতর ভাবে আহত হন। এক বাইক দুর্ঘটনায় বছর চৌত্রিশের সরস্বতী দেবীর পা এবং কোমরের সংযোগকারী হাড় ভেঙে যায়। এর পর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। চিকিৎসকরা জানান, যে ভাবে ওই মহিলার কোমরের হাড় ভেঙেছিল তাতে, একটু এ দিক-ও দিক হলেই তিনি সারা জীবনের মতো চলার শক্তি হারাতে পারতেন। এই অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে তাঁর কোমরের অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন তমলুক জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হাসপাতালের অস্থি বিভাগের শল্য চিকিৎসক শিবশঙ্কর দে এবং অ্যানাস্থেটিস্ট গণেশ বর্মণ ওই জটিল অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা ‘ইন্ট্রা অ্যাবডোমিনাল’ পদ্ধতিতে মহিলার অস্ত্রোপচার করেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গুরুতর জখম অবস্থায় সরস্বতী দেবীকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষা করে জানতে পারেন, তাঁর কোমরের হাড় খুবই খারাপ ভাবে ভেঙেছে। অতি দ্রুত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। কিন্তু অস্ত্রোপচার করতে ঝুঁকি ছিল চিকিৎসকদের। হাসপাতালে এমন অস্ত্রোপচারের তেমন পরিকাঠামোও ছিল না। মহিলার কোমরের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তীক্ষ্ণ সতর্কতার সঙ্গে অস্ত্রোপচার না করতে পারলে পায়ের স্নায়ু এবং ধমনীগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা ছিল। আর এর ফলে একেবারের মত রোগীর পা এবং কোমর অকেজো হয়ে যেতে পারত। চ্যালেঞ্জ নিয়েই চার ঘন্টার মধ্যে অস্ত্রোপচার করে সাফল্যের নজির গড়ল জেলার হাসপাতাল। তমলুক জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা যে চ্যালেঞ্জ নিয়ে এই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন তা জেলা হাসপাতালের জন্য নজিরবিহীন বলেই মনে করছে স্বাস্থ্য ভবন।
অন্যদিকে যার নেতৃত্বে এই অস্ত্রোপচার হয়েছে সেই চিকিৎসক শিবশঙ্কর দে বলেন, ‘‘মহিলার হিপ জয়েন্টের কাপ বা সকেট ভেঙে যায়। পাশাপাশি আরও কয়েকটি হাড় ভেঙে যায়। এই হাড়গুলি ভেঙে গেলে অস্ত্রোপচার করা জরুরি। সাধারণত জেলাস্তরের হাসপাতালে এই ধরনের অস্ত্রোপচার হয় না। কলকাতা থেকে হাসপাতালে বিশেষ যন্ত্রপাতি এনে তা করা হয়। এর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণও নিতে হয়েছিল।’’