নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ছেলেবেলায় সকলেই একটি কবিতা শুনে বড় হয়েছি যে, ‘লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে’। আচ্ছা সত্যিই কি পুঁথিগত বিদ্যা স্বাচ্ছন্দ্যের জীবনযাপনের পথ গড়ে? শুন্য পকেট যখন বাস্তবতা চেনায়, বেকারত্বের যন্ত্রণার চোখের জল যখন রাতের অন্ধকারে ফাঁসের দড়িতে মিশে যায় তখন ছেলেবেলার সেই কবিতা মিথ্যে প্রমাণিত হয়। ডিগ্রি, চাকরি যখন উচ্চবিত্তের কোটি টাকার বিনিময়ে বিক্রিত, কঠোর তপস্যায় শিক্ষিতের মান তখন গিয়ে ঠেকে রাস্তার এককোণায়। হ্যাঁ তেমনই এক শিক্ষিত বেকারের গল্প জানবেন আপনারা।
উত্তর ২৪ পরগণার ঠাকুরনগরের বাসিন্দা রাজু মণ্ডল। ছোট থেকেই মেধাবী। উচ্চমাধ্যমিকে গাইঘাটা ব্লকে সবচেয়ে বেশি নম্বর অর্জন করে সে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির মধ্যে রাজু তাঁর বিষয়টিতে প্রথম হয়ে গোল্ড মেডেল পেয়েছিল। রাজ্যস্তর, কেন্দ্রস্তরে একাধিক চাকরির পরীক্ষা দিয়েও মেলেনি চাকরি। তবু হাল ছাড়েনি রাজু। বেকারত্ব মানেই আত্মহত্যা বা মানসিক বিপর্যস্ত হওয়া নয়। চাইলেই স্বনির্ভর হওয়া যায়। সেই পথ দেখিয়ে রাজু গড়ে তুলেছে “শিক্ষিত বেকার ক্যাফে”। যেখানে সাধ্যের দামের মধ্যেই খাবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মনোরম পরিবেশে আড্ডা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বাবা রাজমিস্ত্রি। মা ঘরের কাজ সামলান। ঘরে ছোট বোন। পড়াশোনা করছে সেও। অনেকসময় বিনা পয়সায় প্রাইভেট টিউশন পড়ান রাজু। বেকারত্বের জীবনে সংসারে আর্থিক সহায়তা দিতে চেয়েছিলেন। তাই লোনের টাকায় চাঁদপাড়া স্টেশনের কাছেই ক্যাফে শুরু করেন। স্বপ্ন ছিল শিক্ষকতা করবেন রাজু। কিন্তু জীবনের কঠিন অঙ্ক প্রতিনিয়ত শিক্ষা দিয়ে চলেছে তাঁকে। পিএইচডি প্রবেশিকা পরীক্ষায় আগেই পাশ করেছেন। তবে স্বপ্ন বাস্তবতা পাবে কিনা সে উত্তর অধরা।