নিজস্ব প্রতিনিধি: পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdhwan) জেলাজুড়ে খাসজমি বিক্রির চক্র(Land Selling Scam) সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্ধমান শহর সংলগ্ন পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে এই চক্র সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। চক্রটি খাসজমি প্লট করে বিক্রি করছে। সেখানেই দোতলা পাকাবাড়ি গড়ে উঠছে। কাঠা পিছু চক্রটি ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা হাতাচ্ছে। এমনই অভিযোগ আসায় পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক(District Magistrate) পূর্ণেন্দু মাজী। প্রাথমিক ভাবে তিনি জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর কাছে এমন অভিযোগ আসছিল। তাই তিনি জেলার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে(Land and Land Reforms Department) বিষয়টি তদন্ত করে খতিয়ে দেখতে বলেছেন। যারা এভাবে জমি বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। যারা জমি দখল করছে তাদের বিরুদ্ধেও একই পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
পূর্ব বর্ধমানের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জমি বিক্রির চক্রটি পাট্টা জমিও হাতিয়ে নিচ্ছে। অনেক সময় তারা জমির রেকর্ডও বদলে দিচ্ছে। জাতীয় সড়কের পাশে বামচাঁদাইপুরে সরকারি জমি ১০-১২জনকে বিক্রি করেছে একটি চক্র। এমনই অভিযোগ পেয়ে কয়েকদিন আগে জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার ওই এলাকায় অভিযান চালান। তিনি জানিয়েছেন, ‘যারা সরকারি জমি বিক্রি করেছে তাদের নাম আমরা জানতে পেরেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গা থেকে জমির রেকর্ড বদলের অভিযোগও আমাদের কাছে আসছে। জমি মাফিয়াদের সঙ্গে সরকারি কোনও আধিকারিক বা কর্মীর যোগাযোগ পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কীভাবে চক্রটি কাজ করছে? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জমি মাফিয়ারা সরকারি জমি প্রথমে বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখছে। পরে ক্রেতা ঠিক করে তারা সেগুলি বিক্রি করছে। পরে জমির দলিল করে দেওয়ার আশ্বাসও দিচ্ছে তারা। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, জমি মাফিয়াদের সঙ্গে এলাকার প্রভাবশালীদের যোগাযোগ রয়েছে। তারা বিভিন্ন মঞ্চে তাদের সঙ্গে ছবি তোলে। সেই ছবি দেখিয়ে তারা বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে। কাঠা পিছু ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা নেওয়ার পর তারা নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে বাড়িও তৈরি করে দেয়। এরা পুকুর ভরাট করেও জমি দখল করছে। এতে সরকারের বদনাম হচ্ছে। তাঁদের আরও দাবি, প্রশাসনের একাংশ এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। সেকারণে প্রকাশ্যে জমি দখল হলেও কেউ বাধা দেয় না।