নিজস্ব প্রতিনিধি: অপেক্ষা ছিল মরশুমের(Winter Season) শুরু থেকেই। কবে শহর ঢাকা পড়বে কুয়াশার চাদরে(Deep Fog)। দেখা গেল সেই চাদরের আস্তারণ দেখা দিল বড়দিনের ঠিক আগের দিন ভোরে। আর প্রথম হাজিরার দিনেই মারকাটারি প্যারফর্মেন্স। থমকে গেল বিমান থেকে ট্রেন মায় ফেরি চলাচলও। রবি ভোরে কলকাতা(Kolkata) সহ দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি জেলায় দাপট দেখিয়েছে ঘন কুয়াশা। ভোর ৬টার সময় সেই কুয়াশা এতটাই ঘন ছিল যে ১৫-২০ মিটার দূরেও কিছু দেখা যাচ্ছিল না। কিন্তু তারমধ্যেই দেখা যায় কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি বেশি উঠে গিয়েছে। পারা গিয়ে ঠেকেছে ১৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মূলত বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তের জেরে পিছু হঠেছে উত্তুরে হাওয়া। পুবালি হাওয়ার হাত ধরে হু-হু করে ঢুকছে জলীয় বাষ্প। তার জেরেই বছর শেষে তাপমাত্রা বেড়েছে। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে শহর কলকাতা। তবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকেই কুয়াশা কেটে রোদ উঠতে শুরু করায় জনজীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে।
কুয়াশার কারণে এদিন সব থেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছ বিমান পরিষেবায়(Flight Service)। দৃশ্যমানতা তলানিতে ঠেকে যাওয়ায় কলকাতা বিমানবন্দরে(Kolkata Airport) বিমান পরিষেবা আংশিক ব্যাহত হয়। সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কোনও বিমান নামেনি। কয়েকটি বিমান উড়লেও, অধিকাংশই নির্ধারিত সময়ের থেকে দেরিতে ছেড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে কলকাতা বিমানবন্দরে দৃশ্যমানতা ৫০ মিটারে নেমে যাওয়ায় এই বিপত্তি। সাতসকলে এই ঘটনায় চিন্তায় পড়েন যাত্রীরা। সকাল ৬টা নাগাদ বিমানবন্দরের রানওয়েতে দৃশ্যমানতা নেমে যায় ৫০ মিটারে। তাতেই বিমান ওঠানামা নিয়ে চিন্তা বেড়েছিল বন্দরের কর্মীদের। কিন্তু, ৭টার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে শুরু করে। দৃশ্যমানতা নেমে যায় ২৫ মিটারে। ফলে ওই সময় বেশ কয়েকটি বিমানের উড়ানের কথা থাকলেও সেগুলি ছাড়তে পারেনি। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি বিমানের অবতরণের কথা থাকলেও কুয়াশার বাধায় সেগুলি মাঝ আকাশে চক্কর কাটতে থাকে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয় তখন। অত্যাধুনিক ক্যাট আলোর ব্যবহার করে বিমান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হয়।
দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় এদিন হাওড়া ও কলকাতার মধ্যে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। একই ছবি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। ঘন কুয়াশার কারণে ডায়মন্ডহারবারেও প্রভাব পড়েছে ফেরি চলাচলে। এদিন সকাল ৮টা থেকে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, তা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। কুয়াশায় ঢেকেছে দ্বিতীয় হুগলি সেতু, হাওড়া ব্রিজ। ধীর গতিতে যান চলাচল করছে। রাস্তায় লোকজনের সংখ্যাও অন্য দিনের তুলনায় কম। ট্রেন চলছে বেশ কিছুটা দেরিতে। বাস-গাড়ির গতিতেও লাগাম টেনেছে কুয়াশা।