নিজস্ব প্রতিনিধি: এ কোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার! মাত্র ৩ বছর বয়সের খুদে ননদের ওপর এত রাগ! এত হিংসা, যে খুন করে দিতে হবে! হ্যাঁ এমনটাই ঘটেছে। সেটাও কলকাতা থেকে হাত ছোঁয়া দূরত্বের এক শহরে। সব থেকে চমকে দেওয়ার মতো বিষয় এটাই যে, এই খুন করেছে বাইরের কোনও লোক নয়, কোনও প্রতিপক্ষ পরিবারও নয়, কোনও দুষ্কৃতী নয়, কোনও রাজনৈতিক দলও নয়। কোনও ঘরশত্রু বিভীষণও এই খুন করেনি। খুন করেছে বাড়িরই বউ। যে কিনা নিজে ওই খুদের দেখভাল করতো। গত বৃহস্পতিবার ঘটেছে সেই খুনের ঘটনা। সেই গৃহবধূ এখন পুলিশের হেফাজতে। এদিনই তাকে আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার বারাসত(Barasat) সদর মহকুমার হাবড়া(Habra) শহর। গ্রেফতার হওয়া ওই গৃহবধূর নাম সাথী সিং। বিষ প্রয়োগে যে খুদের প্রাণ কেড়ে(Murder) নেওয়া হয়েছে তার নাম সুমি সিং। বয়স মাত্র ৩ বছর।
জানা গিয়েছে, সুমি ছিল ওই পরিবারের সব থেকে ছোট সদস্য। তাই তাকে ভালোবাসত সকলেই। বছর ৩ আগে সাথী ওই পরিবারের বউ হয়ে আসে। বিয়ের পর থেকে খুদে ননদ সুমিকে দেখভালও করত সাথী। গত বৃহস্পতিবার সকালে সাথী তাঁর পরিবারের লোকজনকে জানায়, সুমি খেলতে খেলতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, মৃত্যু হয়েছে খুদের। অস্বাভাবিক মৃত্যুর জেরে সুমির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। পুলিশই তার দেহ উদ্ধার করে বারাসত হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পর সেখানে জানা যায়, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে সুমির। এরপরেই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। সন্দেহের তালিকায় চলে আসে সাথীও। চলে টানা জিগাগসাবাদ। আর সেখানেই একের পর এক অসংল্গন উত্তর দিতে থাকে সে। একসময় নিজের দোষ কবুলও করে নেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যেহেতু বাড়ির সবাই ও প্রতিবেশীরা এবং আত্মীয়রাও সুমিকে খুব ভালবাসত তাই তা সহ্য করতে পারেনি সাথী। শুধুমাত্র হিংসার জেরে সে তিন বছর বয়সি খুদে ননদকে বিষ খাইয়ে খুন করতেও তাই পিছোপা হয়নি। পুলিশের কাছে সাথী স্বীকার করেছে যে, সুমিকে খুন করার জন্য সে সুমিকে নিয়ে এক গুণিনের কাছে গিয়েছিল। গুণিনই তাকে বিষ দিয়েছিল। ঘটনার পর থেকেই সেই গুণিন অবশ্য গা ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ এখন তারও সন্ধান শুরু করেছে।