নিজস্ব প্রতিনিধি: কাঁথি দিয়ে যা শুরু হয়েছিল, তার জল মেদিনীপুর, এগরা, কালনা হয়ে এবার ইচ্ছামতী পাড়ের টাকিতে ধাক্কা দিচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী টাকি পুরসভায়(Taki Municipality) এবার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব(No Motion Confidence against Chairman) এনেছেন ১২জন কাউন্সিলর। যদিও এই প্রস্তাব না আনার জন্য সেখানকার পুরপ্রধান বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এক দফা। কিন্তু তাতে বিশেষ কিছু লাভ হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা পুরপ্রধানকে অপসারণের জন্য জেলাশাসক, মহকুমা শাসক ও রাজ্য পুর নগরোন্নয়ন দফতরকে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছে বলেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC) সূত্রে জানা গিয়েছে। এমনকি বর্তমান পুরপ্রধানকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে কাকে সেই পদে বসানো হবে সেই নিয়েও আলোচনা চলছে বলেই সূত্রের খবর।
টাকি পুরসভায় রয়েছে ১৬টি ওয়ার্ড। ২০২২ সালের পুরনির্বাচনে সেখানে ১৪টি আসন জেতে তৃণমূল। মাত্র ২টি আসন পায় বিজেপি। পুরসভার পুরপ্রধান হন সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু গত বছরের প্রথম দিক থেকেই তৃণমূলের কাউন্সিলরা অভিযোগ তুলতে শুরু করেন যে সোমনাথবাবু তাঁদের সঙ্গে কথা বলে পুরসভা চালাচ্ছেন না। তিনি কার্যত বিজেপির কথা মতো চলছেন। আর এই বিবাদের জেরে টাকি পুরসভায় দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থা চলছে। উন্নয়নের কাজ কার্যত তলানিতে। আর তার জেরেই পুরপ্রধানকে সরাতে একজোট হয়েছেন দলের বাকি ১২জন কাউন্সিলর। শহরের উপপুরপ্রধান তৃণমূলের হলেও তিনি পুরপ্রধানের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। জানা গিয়েছে, গত বছর ২০ ডিসেম্বর টাকি পুরসভার ১২ জন কাউন্সিলার চেয়ারম্যান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা জমা করেন। পুর আইন অনুযায়ী, অনাস্থা জমা দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলারদের নিয়ে বৈঠক করতে হয় চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যানকে। কিন্তু দু’জনের কেউই তা করেননি। ফলে সমস্যার সমাধান হয়নি।
তৃণমূলের তরফে সমস্যার সমাধান করার জন্য বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের নিয়ে পুরপ্রধানকে বৈঠক করতে বলা হয়েছিল। সেই বৈঠক হলেও তাতে সমস্যার সমাধান কিছু হয়নি। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব তুলে নেননি বিক্ষুব্ধ ১২ কাউন্সিলর। উল্টে তাঁরা দলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে সোমনাথবাবুকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করতে হবে। বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের দাবি, বর্তমান চেয়ারম্যান রাজ্যের পুর-আইনের কোনও কিছুই মানেন না। সরকারিভাবে অনাস্থা আনা হলে তা ঠেকানোর জন্য যা যা করা উচিত চেয়ারম্যান তার কিছুই করেননি। পরবর্তীক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী যা হবার তা হবে।