নিজস্ব প্রতিনিধি: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস। তাও এক আধবার নয়, একাধিকবার। তার জেরে অন্ত্বঃসত্তা হয়ে পড়লে জোর করে গর্ভপাত করানো। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। এলাকা ছেয়ে গিয়েছে একের পর এক পোস্টারে। উঠেছে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি। আর এই ঘটনাকে ঘিরেই এখন উত্তাল হয়ে উঠেছে পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdhwan) জেলার অন্যতম মহকুমা শহর কাটোয়া(Katwa)। অভিযুক্ত এক ব্যবসায়ী। নাম দিলীপ দেবনাথ(Dilip Debnath)। তার নিজের দু’টি রেস্তরাঁ রয়েছে। আবার অন্য একটি বেসরকারি হোটেলের ম্যানেজারও তিনি। একই সঙ্গে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ। এহেন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে বাড়ির পরিচারিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ। এমনি ওই পরিচারিকা অন্ত্বঃসত্তা হয়ে পড়লে জোর করে তাঁর পরিচারিকার গর্ভপাত করানোর অভিযোগও উঠেছে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে এখন গা ঢাক দিয়েছে ওই অভিযুক্ত। যদিও শাসকদলের তরফে কাটোয়া-১ ব্লকের তৃণমূলের(TMC) সহ-সভাপতি বিকাশ চৌধুরী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতা বা কর্মী নয়। যা দোষ করেছে তার শাস্তি হবে। আইন আইনের পথে চলবে।’
জানা গিয়েছে, বছর আঠাশের ওই নির্যাতিতা স্বামী পরিত্যক্তা ও দুই সন্তানের মা। থাকতেন বাবা-মার সঙ্গে। কাটোয়া শহরের ইঁদারাপার এলাকার বাসিন্দা দিলীপের বাড়িতে রাঁধুনীর কাজ করতে গিয়েই তার সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল নির্যাতিতার। ঘটনার জেরে ওই নির্যাতিতার দিদির দাবি, ‘দিলীপ বোনকে বিয়ে করবে বলে জানিয়েছিল। আলাদা বাড়ি করে সংসার পাতারও স্বপ্ন দেখিয়েছিল। তার পরই দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়।’ পরে অবশ্য তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা। এর মাঝেই অন্ত্বঃসত্তা হয়ে পড়েন তিনি। সেই খবর দিলীপকে জানাতে গর্ভপাতের জন্য চাপ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গত মাসের ২৫ তারিখ থেকে দু’দিন নিখোঁজ ছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেইসময় কাটোয়ার এক নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে জোর করে গর্ভপাত করানো হয় তাঁর। ফিরে আসার পর শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন নির্যাতিতা। তখনই পরিবারকে সমস্ত কথা জানান। এর পর ২ জুন মণ্ডলহাট থানায় ধর্ষণ এবং জোর করে গর্ভপাতের অভিযোগের দায়ের করেন। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে দিলীপ।
এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে কাটোয়া শহরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দিলীপের বিরুদ্ধে নিখোঁজ পোস্টারও পড়েছে শহরজুড়ে। বিজেপির(BJP) কাটোয়া সাংগাঠনিক জেলার সভাপতি সীমা ভট্টাচার্ষের অভিযোগ, ‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নির্যাতিতাকে ভয় দেখিয়েছে অভিযুক্ত। জোর করে গর্ভপাত করিয়েছে। আশা করব, পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে এবং দোষীকে শাস্তি দেবে।’ পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দিলীপের সন্ধানও শুরু করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই সে ধরা পড়বে।