নিজস্ব প্রতিনিধি: ছিলেন বামপন্থী। পরে হয়েছেন বিজেপিপন্থী। ছিলেন বাম বিধায়ক। রাজ্য পরিবর্তনের পরে পাল্টি খেয়ে এসেছিলেন তৃণমূলে(TMC)। উনিশের ভোটে দল তাঁকে প্রার্থীও করে। জিতে তিনি হয়ে যান তৃণমূলের সাংসদ। কিন্তু বাংলার(Bengal) মাটিতে বিজেপির উত্থান দেখে তিনি আবারও পাল্টি খান। সোজা ঢুকে পড়েন পদ্মশিবিরে। কিন্তু একুশের ভোটে বাংলায় বিজেপি(BJP) গোহারান হারতেই তাঁর সাংসদ পদ বাতিল করতে উঠেপড়ে লাগে তৃণমূল। ভয়ে আবারও তিনি ফিরে আসেন জোড়াফুলে। এখন আরও একটা লোকসভার ভোট(General Election 2024) দুয়ারে কড়া নাড়ছে। তিনি আবারও প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। কিন্তু তাঁকে এখন আর প্রার্থী(Party Candidate) হিসাবে চাইছেন না দলেরই নীচুতলার কর্মী ও নেতারা। এলাকার বিধায়কদেরও একইমত। সম্ভবত দলও এবার আর তাঁকে প্রার্থী করবে না। নজরে সুনীল মণ্ডল(Sunil Mondol)। বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের(Purba Burdwan Constituency) সাংসদ।
রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী কারা কারা হতে পারেন, বা দলের নীচুতলার নেতাকর্মীরা এবং এলাকার বাসিন্দারা কাকে প্রার্থী হিসাবে চাইছেন বা পেতে চান তা জানতে সমীক্ষা চালাচ্ছে একটি বেসরকারি সংস্থা। সেই সমীক্ষাতেই উঠে এসেছে সুনীলকে নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য। বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে সুনীলকে আর কেউই প্রার্থী হিসাবে চাইছেন না। তা সে তৃণমূলের নীচুতলার নেতাকর্মী হোক কী আমজনতা। বার বার পাল্টি খাওয়া সুনীলের আর কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই তাঁদের কাছে। বাংলার শত্রু হয়ে ওঠা বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানো সুনীলকে পছন্দও করছেন না তাঁর সংসদীয় এলাকার মানুষেরা। যা পরিস্থিতি সম্ভবত সুনীলকে এবারে আর প্রার্থী করবে না তৃণমূলও। সেক্ষেত্রে এই কেন্দ্রে নতুন মুখই আনতে পারে দল। জল্পনা বয়সে নবীন ও তরুণ কাউকে প্রার্থী করা হবে এখানে। নতুন মুখ আনা হবে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনেও। কেননা এই আসনটিতে উনিশের ভোটে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী এস এস আলুওয়ালিয়া। এবারে সেই আসন ছিনিয়ে নিতে নামবে জোড়াফুল শিবির।
বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে উনিশের ভোটে তৃণমূল অনেক ভোটে এগিয়েছিল। এই লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা রায়না, জামালপুর, কালনা, মেমারি, কাটোয়া, পূর্বস্থলী উত্তর ও দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র একুশের ভোটে তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। কিন্তু এই কেন্দ্রের সাংসদ সুনীল মণ্ডলকে নিয়ে তৃণমূল অস্বস্তিতে পড়েছিল। তিনি বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন। পরে সুনীল তৃণমূলে ফিরে এলেও তাঁকে নিয়ে অস্বস্তি কাটেনি জোড়াফুলে। নবজোয়ার কর্মসূচিতে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওই এলাকায় গিয়ে তা টেরও পেয়েছিলেন। জামালপুরের সভায় দলের এক কর্মী প্রকাশ্যে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে নতুন কাউকে প্রার্থী করার দাবি জানান। সম্ভবত সেই দাবিতেই এবার শিলমোহর পড়তে চলেছে।