নিজস্ব প্রতিনিধি: বড়সড় সাফল্যের মুখ দেখল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। কোভিডকাল থেকেই মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে ভুয়ো রেশনকার্ড(Fake Ration Cards) চিহ্নিত করতে রাজ্যের খাদ্য দফতরকে(Food Department) চাপ দিচ্ছিলেন। তার জেরে রাজ্যের রেশন ব্যবস্থায় Biometric পদ্ধতি চালু করার পাশপাশি Digital Ration Card চালু করা হয় যার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় আধারকে। আর তাতেই এসেছে সাফল্য। চলতি আর্থিক বছরে দেখা যাচ্ছে, বাংলার বুক থেকে কার্যত ২ কোটি রেশন গ্রাহক(Ration Card Holders) উধাও হয়ে গিয়েছেন। খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, এই ২ কোটি গ্রাহক আদতে ভুয়ো। আর এই গ্রাহক কমে যাওয়ায় রাজ্যের আর্থিক সাশ্রয় হতে চলেছে বছরে ৩৬০০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে প্রথম ফুসফুস প্রতিস্থাপন মমতার বাংলায়
খাদ্য দফতরের তথ্য বলছে, বাংলায় Digital Ration Card চালুর আগে রাজ্যে রেশন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৭০ লক্ষ। কিন্তু সেই সংখ্যাটাই এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৭৮ লক্ষ মতো। রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরেই নিখরচায় রেশন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ফলে প্রতি বছর বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয় সেই খাতে। পরে আধার-নির্ভর যাচাইয়ের মাধ্যমে ভুয়ো, মৃত ব্যক্তির নামে থেকে যাওয়া রেশন কার্ড, এক ব্যক্তির একাধিক কার্ডের অস্তিত্ব খোঁজা ইত্যাদির প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই পথে খাদ্য দফতরকে হাঁটতে বাধ্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তাতেই এসেছে এই সাফল্য। তবে খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, এই ২ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড হোল্ডাররা যদি কেউ দাবি করেন যে তাঁদের নাম ভুল ভাবে কাটা হয়েছে বা বাদ পড়েছে এবং যদি তাঁরা উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেন তাহলে তাঁদের নিষ্ক্রিয় কার্ড ফের সচল করে দেওয়া হবে। তবে বছরে ৩৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় এখন রাজ্য সরকারের কাছে অনেক বড় হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন কোনও জেলাতেই ১০০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি
কেন এতটা সাশ্রয়? এখন যে রেশন ব্যবস্থা বাংলায় চালু রয়েছে তাতে প্রতি মাসে ১ জন রেশনগ্রহীতার জন্য নিখরচায় ৫ কিলোগ্রাম পর্যন্ত খাদ্যশস্য বরাদ্দ থাকে। প্রতি মাসে ১ কিলোগ্রাম খাদ্যশস্যে সরকারের খরচ কমবেশি ৩০ টাকা। সেই হিসাবে ২ কোটি কার্ডপিছু ফি মাসে রাজ্যের সাশ্রয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরে ৩৬০০ কোটি টাকা। সরকারি তথ্য বলছে, ২০২১-২২ আর্থিক বছরের তুলনায় ২০২২-২৩ বছরে খাদ্য দফতরের বাজেট বরাদ্দ কমেছিল প্রায় ৩২০০ কোটি টাকা। আর্থিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, খাদ্য ও সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরে বাজেট বরাদ্দ কমানো কঠিন। ফলে মূল খরচ কমানো গিয়েছে বলেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ বাজেট বরাদ্দে কমাতে পেরেছে রাজ্য। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, দুয়ারে রেশন এখনও চালু রয়েছে। ধরে নেওয়া যেতে পারে, তার খরচের একটি প্রতিফলন রয়েছে বরাদ্দের ওপর।