নিজস্ব প্রতিনিধি: অন্য সময়ে বেশ শান্ত। তির তির করে বয়ে যায় জল। সাদা পাথরের ওপর দিয়ে যাওয়া সেই নদী দেখতে ভিড় জমান পর্যটকেরা(Tourist)। কিন্তু ভূটান ঘাটে বৃষ্টি হলেই সেই নদীতে নেমে আসে হড়পা বান(Flash Flood)। যারা ডুয়ার্সের(Dooars) এইসব নদীর চরিত্রের সঙ্গে ওয়াকিবহাল আছেন তাঁরা বর্ষার সময়ে বা বৃষ্টির আগে পরে করে ওই সব নদীরে সরাসরি নেমে কিছু করেন না। আর যারা এই চরিত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়, তাঁরাই পড়েন বিপদে। ঠিক যেমনটি ঘটল কলকাতা থেকে ডুয়ার্সে ঘুরতে যাওয়া এক দল পর্যটকের সঙ্গে। হড়পা বানে ভেসে গেলেন ৪ পর্যটক। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২জনের। বাকি ২জন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার দুপুরে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার মাল মহকুমার নাগরাকাটা(Nagrakata) ব্লকের ভগতপুর এলাকায়।
জানা গিয়েছে, নাগরাকাটার বাসিন্দা রূপক বিশ্বাসের বাড়িতে কলকাতা থেকে এক আত্মীয় বেড়াতে এসেছিলেন। রবিবার দুপুরে রূপকবাবুর মেয়ে-সহ আটজন ভগতপুর ও ঘাঠিয়া চাবাগানের মাঝখানে ঘাঠিয়া নদীতে স্নান করতে নেমেছিলেন। সেই সময়ই নদীতে হুট করে হড়পা বান চলে আসে। তাতেই ভেসে যান চারজন। তাঁদের মধ্যে এক মা-মেয়েও ছিল। চিৎকার চেঁচামেচিতে স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত নদীতে নেমে ২জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও ওই দুই মহিলার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রায় ১ ঘন্টা বাদে ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ মিটার দূরে দুইজনের দেহ উদ্ধার হয়। বাকি দুইজনকে দ্রুত উদ্ধার করে মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হড়পা বান এক ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়, যা আচমকাই ঘটে যায়। এক কথায় বলতে গেলে, স্বল্প এলাকা জুড়ে সংঘটিত দ্রুত গতির বন্যাই হল হড়পা বান। সাধারণ বন্যার সঙ্গে হড়পা বানের পার্থক্য কেবল সময়ের পরিসরে। সাধারণ বন্যা যেখানে দীর্ঘ সময় জুড়ে বিরাজ করে, সেখানে হড়পা বানের স্থায়িত্ব খুবই কম এবং দ্রুত গতিতে ঘটে থাকে। স্বল্প স্থান জুড়ে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের জেরে সাধারণত হড়পা বান তৈরি হয়। ভারতে এই ধরনের হড়পা বান দেখা যায় মালভূমি ও পার্বত্য এলাকায়। তবে ডুয়ার্সের বুকে এই ধরনের বিরল নয়। কিন্তু এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা তার সঙ্গে বেশ পরিচিতিও। তারপরেও অবশ্য এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যার শিকার হন মূলত পর্যটকেরা।