নিজস্ব প্রতিনিধি: এক যুগ আগে শিল্প গড়ার নামে জমি নিয়েও সেই জমিতে কিছু না করে তা ফেলে রাখা হয়েছিল। এবার সেই জমিই ফিরিয়ে নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। নজরে উত্তরবঙ্গের(North Bengal) জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri) জেলার ফুলবাড়ি(Fulbari) এলাকা। এখানেই বাম জমানায় ৮০ একর জমি Videocon গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার। কথা হয়েছিল সেই জমিতে IT Park গড়বে Videocon গোষ্ঠী। কিন্তু আজও সেখানে একটা ইটও গাঁথা হয়নি। তাই রাজ্য সরকার ঠিক করেছে ওই জমি ফিরিয়ে নেওয়া হবে Videocon শিল্প গোষ্ঠীর কাছ থেকে। সেই লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের নির্দেশে ওই ৮০ একর জমি নিজেদের হেফাজতে নিতে কাজ শুরু করে দিয়েছে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদ বা SJDA। সংস্থার চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘শিল্প স্থাপনের নামে জমি নিয়ে তা ব্যবহার করেনি Videocon কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা সেই জমি Videocon’র কাছ থেকে ফেরত নেব। ওই জমি অন্য কোনও উন্নয়নমূলক কাজে লাগানো হবে। শীঘ্রই ওই সংস্থাকে এর জন্য চিঠি দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন CBI তদন্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য
বাম জমানায় কার্যত ঢাকঢোল পিটিয়ে Videocon-কে জমি দেওয়া হয় ফুলবাড়িতে। ২০০৬ সাল নাগাদ Videocon-কে দীর্ঘমেয়াদী লিজে সেই জমি দেওয়া হয়। সেখানকার ৮০ একর জমিতে IT Park করার কথা ঘোষণাও করা হয়েছিল। কিন্তু, তিস্তা দিয়ে অনেক জল গড়ালেও সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। সেই জমি অযত্নে পড়ে রয়েছে। এবার ওই জমি ফেরত নিতে তৎপর হল রাজ্য সরকার। নবান্নের নির্দেশে Silliguri Jalpaiguri Development Authority বা SJDA জমির নথি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখেছে। কেননা জমিটির ভৌগলিক গুরুত্ব বেশ বেশি। জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে হলেও ফুলবাড়ি শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন। সেখান থেকে সড়কপথে সহজেই শিলিগুড়ির বিভিন্ন বাজার, বাসস্ট্যান্ড ও বাগডোগরা বিমানবন্দরে যাওয়া যায়। এছাড়া, সেই জমি থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে রয়েছে মিনি সচিবালয় উত্তরকন্যা। তাই এখন ওই ৮০ একর জমির দরও আকাশছোঁয়া। তবে শুধু Videocon নয়, শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় বেসরকারি সংস্থার কাছে অব্যবহৃত অবস্থায় থাকা সব জমিই উদ্ধারের পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন সুশান্তের গ্রামেই কিনা প্রার্থী দিতে পারল না CPI(M)
এই বিষয়ে সৌরভবাবু জানিয়েছেন, ‘শিলিগুড়িতে জমির অভাব। এখানে উদ্বাস্তু, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ, রেল, পূর্তদপ্তরের জমি ছড়িয়ে রয়েছে। এর বাইরে কিছু শত্রু সম্পত্তি বা এনিমি প্রোপারটি রয়েছে। বিতর্কিত জমির সংখ্যা কম নয়। সংশ্লিষ্ট জমিগুলি উন্নয়নমূলক কাজে লাগানো সম্ভব নয়। প্রয়োজনীয় জমির অভাবে অনেক প্রকল্প মার খাচ্ছে। কিন্তু, কিছু সংস্থা ও উদ্যোগপতি শিল্প স্থাপনের বিভিন্ন সময় সরকারের কাছ থেকে জমি নিয়েছে। সেগুলি অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে আধিকারিকদের খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় SJDA’র কোনও জমি অরক্ষিত অবস্থায় নেই। ইতিমধ্যেই সমস্ত জমি জরিপ করে সীমানা প্রাচীর দেওয়া হয়েছে। কিছু জমিকে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজে লাগানো হচ্ছে।’