নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলাদেশে ধারাবাহিক সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে সরব আন্তর্জাতিক মহল। সরব হয়েছে আমেরিকাও। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে নিরব ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর এটা নিয়েই এবার প্রশ্ন তুলল এপার বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র সম্পাদকীয়তে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিরাবতা নিয়ে সরব হল শাসকদল। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম করে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তিনি নিষ্ক্রিয় কেন? এর নেপথ্যে কোন কোন রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে? সেসব নিয়েও তোলা হয়েছে প্রশ্ন।
মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে বাংলাদেশের হৃদয় হতে নামক এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনে ওই দেশের সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে নিন্দা করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই প্রতিবেদনের প্রতিটি ছত্রে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং শাসকদল বিজেপির ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। ওই সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘আমরা বিস্মিত, ভারতের যে প্রধানমন্ত্রী ভোট টানার অঙ্কে বাংলাদেশে পুজো দিতে গিয়ে প্রচার সারলেন, তিনি প্রথম থেকে নিষ্ক্রিয় কেন? নাকি বাংলাদেশের হিন্দুনিগ্রহ দেখাতে পারলেন, সেই সুড়সুড়ি দিয়ে এই বাংলায় হিন্দু-আবেগ উসকে ভোট করার চেষ্টা? বাংলাদেশের ঘটনায় যথাযথ তদন্ত চাই’। বিজেপিকে বিঁধেই আবার লেখা হয়েছে, ‘বিভিন্ন দেশের মৌলবাদী শক্তির ধর্ম আলাদা হতে পারে, কিন্তু ধর্মের নামে ভোটব্যবসার স্বার্থে এরা পরস্পরের পরিপূরক। একে অপরকে দেখিয়ে লোক খেপায়। বলি হন সাধারণ মানুষ’।
এই সম্পাদকীয় ছাড়াও এদিন জাগো বাংলার প্রথম পাতায় ‘শকুনের রাজনীতি বিজেপি’র শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। যাতে বিজেপির মেরুকরণ রাজনীতি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও প্রথম থেকেই বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি নিয়ে সরব তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের ভোট প্রচারে তিনি সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণ করেছিলেন বারেবারে। এবার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে মোদি সরকার এবং মন্ত্রীদের নিরাবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বড় চাল দিল জোড়াফুল শিবির, এমনটাই মনে করছেন বাংলার রাজনৈতিক মহল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও এদিন বলেছেন, ‘বাংলাদেশের হিংসা নিয়ে বিজেপি কোনও রাজনৈতিক চাল দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। নাহলে কেন শুভেন্দু বলবেন, বাংলাদেশের ঘটনার পর আমাদের ভোট বাড়বে? আমরা জিতব সামনের ভোটগুলোয়? তাহলে তো স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, সমীকরণ ঠিক কী?’ যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। তবে বাংলাদেশের ঘটনাবলী নিয়ে এপার বাংলায় রাজনৈতিক তরজা অন্যমাত্রা নিল।