নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) হাত ধরে চালু হওয়া হাওড়া(Howrah) নিউ জলপাইগুড়ি(New Jalpaiguri) বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে(Vande Bharat Express) ইতিমধ্যেই ৪ বার হামলার ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এর মধ্যে ২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে বিহারে এবং ২টি ঘটেছে বাংলার বুকে। প্রতি ক্ষেত্রেই ট্রেনের দরজা বা জানলা লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়েছে। সেই হামলার ঘটনায় ট্রেনের কামরার কাঁচ ভাঙলেও কোনও যাত্রী আহত হননি এখনও পর্যন্ত। তবে বার বার একই ট্রেনে হামলার ঘটনায় কিছুটা হলেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে যাত্রীদের মধ্যে। সেই বিষয়টি সামনে আসায় রীতিমত অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল রেলের পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারকেও। কেননা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের হামলার ঘটনায় বঙ্গ বিজেপির নেতারা রাজ্য সরকার ও তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুললেও যাত্রীরা কাঠগড়ায় তোলেন রেলকে। কেননা তাঁরা মোটা টাকার বিনিময়ে ট্রেনের টিকিট কেটেছেন। তাই তাঁদের প্রশ্ন ছিল কেন্দ্র সরকার কেন যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধান করতে পারছে না। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মঙ্গলবার সকালে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রীদের সাহস ও সুরক্ষা জোগাতে ট্রেনের সওয়ারি হন কেন্দ্রের পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিল(Kapil Moreshwar Patil)। শুধু তাই নয়, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে বার বার হামলার ঘটনায় বাংলার রাজ্য সরকার যে দায়ী নয় সেটাও বুঝিয়ে দেন।
আরও পড়ুন কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনিতে আদালতে আত্মসমর্পণ নিশীথের
এদিন সকালে হাওড়া স্টেশন থেকে যাত্রা শুরুর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। পাশাপাশি মালদা টাউন স্টেশনে নেমেও তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানেই তিনি জানান, ‘রাজ্যের মানুষের উন্নতির কারণেই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু করা হয়েছে, মানুষের এটা বোঝা উচিত, দেশের উন্নয়নে মানুষের অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। ভারত সরকার এই ট্রেন চালিয়েছে, পাথর ছোঁড়া অন্যায়। এই ট্রেন চলায় মানুষ খুশি। ভ্রমণে সময় কম লাগছে, মানুষের ভালো যাত্রা হচ্ছে, মানুষের চিন্তাভাবনা বদলানো উচিত। ভারত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মানুষের সহযোগিতা থাকা উচিত। ঝাড়খণ্ড হোক, বিহার হোক বা পশ্চিমবঙ্গ, যেখানেই এই ধরনের মানুষ পাথর ছুড়ে মারে, তাঁদেরও ভাবা উচিত আমরা এই দেশের নাগরিক। তাঁদেরও এই দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা উচিত। তাই এই ধরনের মানুষ পাথর ছুড়ে মারার মাধ্যমে পরিষেবা ব্যাহত করা উচিত নয়।’
আরও পড়ুন খুদে পড়ুয়াদের নিরাপত্তার খাতিরে নয়া অ্যাপ আনছে মমতার সরকার
নিজের বক্তব্যে এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী একবারের জন্যও বাংলার রাজ্য সরকারকে দোষ দেননি এই ঘটনার জন্য। কার্যত সেটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, বন্দে ভারতের হামলার ঘটনায় কেন্দ্র সরকার বাংলার সরকারকে কাঠগড়ায় তুলতে রাজি নয়। যদিও বঙ্গ বিজেপির একাংশ এই হামলার ঘটনায় প্রথমে রাজ্যের বিরুদ্ধেই সরব হয়েছিল। এখন অবশ্য তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন। বস্তুত বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ওপর শুধু যে বাংলার বুকেই হামলার ঘটনা ঘটছে তাই নয়। গোটা দেশের একাধিক রাজ্যেই এই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটছে। সেই সূত্রেই বাংলার ঘটনায় এখানকার রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুললে যে তাতে বিতর্ক বাড়বে এবং তা কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই যাবে সেটা বুখেই সম্ভবত এবার বন্দে ভারত নিয়ে নিরাপদে পদক্ষেপ করছেন গেরুয়া শিবিরের নেতামন্ত্রীরা। অন্তত ওয়াকিবহাল মহলের এমনই অভিমত।