নিজস্ব প্রতিনিধি, মুম্বই: দলীয় বিধায়কদের বিদ্রোহে আগেই খুঁইয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি। আর শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘বিজেপির হাতের পুতুল’ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বাবা বালাসাহেব ঠাকরের হাতে গড়া শিবসেনার নাম ও প্রতীক ব্যবহারের অধিকারও হারান উদ্ধব ঠাকরে। তার পরেই জরুরি সাংবাদিক সম্মেলন করে বালাসাহেব পুত্র জানিয়ে দিয়েছেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হবেন।’ নির্বাচন কমিশনকে কার্যত খুনি হিসেবে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই আদেশের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু এইভাবে শিবসেনাকে শেষ করা যাবে না।’
গত জুন মাসে বিজেপির ইন্ধনে শিবসেনায় ভাঙন ধরিয়ে উদ্ধব ঠাকরেকে হঠিয়ে মহারাষ্ট্রের কুর্সিতে বসেছিলেন একনাথ শিন্ডে। আর তার পরেই শিবসেনার দুই যুযুধান গোষ্ঠীর মধ্যে দলের নাম এবং তিরধনুক প্রতীক কারা ব্যবহার করতে পারবে, তা নিয়ে লড়াই শুরু হয়। জল গড়ায় নির্বাচন কমিশনের আঙিনায়। এদিন সন্ধ্যায় কমিশনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, শিবসেনার প্রতীক এবং নাম ব্যবহার করতে পারবেন না দলের প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরের পুত্র উদ্ধব ঠাকরে। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীই আসল শিবসেনা এবং তারাই দলের নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহার করবে।’ নির্বাচন কমিশনের এমন নির্দেশে মোটেও অবাক হননি উদ্ধব শিবিরের নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, বিজেপি নেতাদের দয়াতেই নির্বাচন কমিশনার হয়েছেন রাজীব কুমার, অনুপ চন্দ্রারা। ফলে ভৃত্যরা যে প্রভুদের খুশি করার চেষ্টা করবেন তা নতুন কিছু নয়।
কমিশনের নির্দেশের পরেই উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা গোষ্ঠীর রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। সেই জল্পনার মধ্যেই জরুরি সাংবাদিক সম্মেলন করেন বালাসাহেব পুত্র। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘মোদি জমানায় নির্বাচন কমিশন বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। প্রভুরা যা নির্দেশ দিচ্ছেন, তাই পালন করে চলেছেন মেরুদণ্ডহীন কমিশনাররা। সুপ্রিম কোর্টে এখনও মামলা বিচারাধীন। তার মধ্যে আচমকা এই নির্দেশ দে্দওয়া হয়েছে। সামনেই বৃহন্মুম্বই পুর নিগম সহ একাধিক পুরসভার নির্বাচন। আর ওই নির্বাচনের আগে বিজেপির সুবিধা করে দিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রীকেও আক্রমণ করেছেন উদ্ধব। তাঁর কথায়, ‘দেশে তো একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন। লালকেল্লা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবেই গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘোষণা করে দিন।’