নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী: আইন প্রণেতা তিনি। অথচ তিনিই সাধারণ মানুষকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে উৎসাহিত করলেন। স্থানীয় থানার ওসির সামনে দুষ্কৃতীদের গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলার মতো ভয়াবহ নিদান দিলেন শাসকদল আওয়ামী লীগের নেতা তথা নোয়াখালী-১ আসনের সাংসদ এম এই ইব্রাহিম। শুক্রবার রাতে দলীয় এক নেতার স্মরণসভায় তিনি বলেছেন, ‘দুষ্কৃতীদের দেখলেই গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলুন। কেউ মামলা করলে আমি বুঝে নেব।’
শাসকদলের সাংসদের এমন নিদান নিয়ে ইতিমধ্যেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। প্রশাসনের আশঙ্কা, শাসকদলের সাংসদের নিদানকে হাতিয়ার করে এবার আইন হাতে নেওয়ার খেলায় মেতে উঠবেন স্থানীয়রা। তাতে আইনসৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে সোনাইমুড়ির দেউটি ইউনিয়নের প্রাক্তন আওয়ামী লীগ সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী-১ আসনের সাংসদ এম এইচ ইব্রাহিম। স্থানীয় তানার ওসির সামনে তিনি বলেন, ‘দুষ্কৃতীদের যেখানে দেখবেন সেখানেই ধরে গণধোলাই দেবেন। দেখবেন গণধোলাইতে যেন দুষ্কৃতী মারা যায়। কেউ মামলা করলে আমি বুঝে নেব। প্রয়োজনে আমি আসামি হব। আপনাদের কিছু হবে না।’
খোদ সাংসদের মুখে এমন কথা শুনে স্মরণসভায় উপস্থিত শাসকদলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ স্তম্ভিত হয়ে পড়েন। একে অন্যের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে থাকেন। ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন, দুষ্কৃতীদের গণপিটুনির নামে এবার বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের বেছে বেছে খুন করা হবে। স্থানীয় থানার ওসির উপস্থিতিতে কীভাবে একজন সাংসদ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সওয়াল করলেন, সেই প্রশ্নও উঠেছে। যদিও সোনাইমুড়ি থানার ওসি দাবি করেছেন, তিনি সাংসদের এমন নিদান শোনেননি।
আরও পড়ুন শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতেই কবিগুরুর ১৬১তম জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান