নিজস্ব প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ: আশঙ্কাই সত্যিই হল। লঞ্চডুবির ঘটনার ৪৫ ঘন্টা বাদে শীতলক্ষ্যা নদীর বুক থেকে উদ্ধার হল নিখোঁজ আরোহী রাজবংশির নিথর দেহ। আজ মঙ্গলবার বেলা বারোটা নাগাদ হরিপুর পাওয়ার প্ল্যান্টের কাছ থেকে তিন বছরের আরোহীর নিথর দেহ উদ্ধার করেন উদ্ধারকারীরা। দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে পরিবারের। আরোহীর পাশাপাশি আরও একজনের দেহ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় মোট দশজনের দেহ উদ্ধার করা হল।
গত রবিবার দুপুরে দাদু বাড়ি থেকে নিজেদের বাড়ি ফিরছিল মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার বাসিন্দা দুই বোন স্মৃতি রাজবংশী (১৮) ও আরোহী রাজবংশী (৩)। দুর্ঘটনায় পড়া অভিশপ্ত লঞ্চের যাত্রী ছিল দুই বোন। দুর্ঘটনার কয়েক ঘন্টা বাদে রবিবার রাতে উদ্ধার করা হয় বড় বোন স্মৃতির নিথর দেহ। যদিও আরোহীর কোনও খোঁজ মেলেনি। ছোট মেয়ের খোঁজে দুর্ঘটনার পর থেকেই শীতলক্ষ্যার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পাগলের মতো ছুটে বেড়িয়েছিলেন হতভাগ্য পিতা জয়রাম রাজবংশী। উদ্ধারকারীদের কাছে বার বার কাতর আর্জি জানিয়েছিলেন, ‘জীবিত হোক কিংবা মৃত, একরত্তি আরোহীকে যেন উদ্ধার করা হয়।’
এদিন সকাল থেকে ফের শীতলক্ষ্যায় নেমে উদ্ধারকার্য শুরু করেন উদ্ধারকারীরা। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই আরোহীর নিথর দেহের খোঁজ পান তাঁরা। বড় মেয়ের পর ছোট মেয়ের অকালে যাওয়ার ঘটনায় কার্যত শোকে পাথর বাবা জয়রাম রাজবংশী। আদরের আরোহীর নিথর দেহ আঁকড়ে শুধু কেঁদেই চলেছেন তিনি। বিলাপ করে বলে চলেছেন, ‘দুপুরে আমায় ফোন করে বলল, বাবা তোমাকে কয়েকদিন ধরে দেখিনি। মন খারাপ করছে। আমরা যাচ্ছি। আর দেখা হল না।’