নিজস্ব প্রতিনিধি, দিনাজপুর: আষাঢ় মাস শেষ হতে চলল। অথচ বর্ষার দেখা নেই। উল্টে প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। প্রচণ্ড তাপে শুকিয়ে কাঠ মাঠ-ঘাট, খাল-বিলও। চাষের কাজ করতে চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে কৃষিজীবীদের। তাই বৃষ্টির আশায় শুক্রবার ব্যাঙের বিয়ে দিলেন দিনাজপুরের (Dinajpur) রাজবাটি হীরাবাগানের বাসিন্দারা। আর সেই অভিনব বিয়ে দেখতে কার্যত ভিড় উপচে পড়েছিল। যদিও বিয়ের পরে ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই। কিন্তু ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামবে বলে অটুট বিশ্বাস স্থানীয় বাসিন্দাদের।
রাজবাটী হীরাবাগানের (Rajbati, Hirabagan) মন্দির প্রাঙ্গনে বসেছিল বিয়ের আসর। দুটি পেল্লাই আকারের ব্যাঙ ধরে বর-কনে হিসেবে হাজির করা হয়েছিল। ঘটা করে বর ব্যাঙের নাম রাখা হয়েছিল ভানু আর কনের নাম রাখা হয়েছিল মতি। বর-কনে ব্যাঙের মায়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন সুমনা সরকার (Sumana Sarkar) ও আলপনা মহান্ত (Alpana Mohanta)। বর-কনেকে সাজিয়ে বাজনা বাজিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল ছাদনাতলায়। তার পর পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে শুরু হয় লৌকিক আচার। হিন্দু ধর্মের বিয়ের রীতি মেয়ে ভানু-মতির মধ্যে যেমন মালাবদল করানো হল, তেমনই হল সিঁদূর দান। এমনকী সাত পাক ঘোরানোও হল। অভিনব বিয়েতে হাজির অতিথিদের খালিমুখে ফেরানো হয়নি। খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো হয়েছে।
ব্যাঙ বরের মা সুমনা সরকার (Sumana Sarkar) সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই অনাবৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে ব্যাঙের বিয়ে হতে দেখেছি। বিয়ের পরেই বৃষ্টি হয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে মনে করছি।’ বিয়ের পুরোহিতের (Preist) দায়িত্ব পালন করেছিলেন নারায়ণ চন্দ্র ঝা (Narayan Chandra Jha)। তিনি বলেন, ‘সনাতন ধর্মে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে। আমাদের এলাকায় গত কয়েক বছরই বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’