নিজস্ব প্রতিনিধি: বাঁশদহ বিল, চাঁদের বিল বাঁচাতে ২১ বছর আগে আন্দোলন শুরু করেছিলেন স্বপন দেবনাথ। বর্তমানে তিনি রাজ্যের মন্ত্রী। সে পুজো হয় বিলের পাড়ে জলাজমি আর মাছ বাঁচানোর উদ্দেশ্যে। মন্ত্রীর উদ্দেশ্য এখন অনেকটাই সফল। তাই এখন পুজো হয় মহা ধুমধামে। ব্যাপারটা ঠিক কী? পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী-১ ব্লকের কোবলা এলকায় প্রায় সাড়ে নয় কিমি লম্বা চাঁদের বিল আর একশো শতক জায়গা জুড়ে থাকা বাঁশদহ বিল। এই বিলে প্রচুর চুনো মাছ ছিল। কিন্তু স্থানীয় মৎসশিকারীদের দৌঁড়াত্মে তা বিপন্ন হওয়ায় স্বপন দেবনাথ এক অভিনব উপায় অবলম্বন করেছিলেন।
রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জলাজমি আর মাছ বাঁচানোর বিলের পাড়ে শুরু করেছিলেন কালীপুজো। আর পুজোয় মা কালীর ভোগে নিবেদন করলেন কাঁকড়া-সহ চুনো মাছের নানা পদ। তাতেই কাজ হয়, ওই দুই বিলে মাছ বেশ ভালোই হয় এখন। মন্ত্রীর কথায়, খালবিল আর চুনোমাছ বাঁচাতে দেবীর কাছে মানত করে পুজোর শুরু করেছিলাম। খালবিল বাঁচলে কৃষকের জল বাঁচবে, ফসল বৃদ্ধি পাবে। আবার বিলে থাকা চুনোমাছও পাবে। মমতাদির জন্য সেই মানত অনেকটাই পূরণ হয়েছে।
২১ বছর আগে স্বপন দেবনাথের শুরু করা সেই পুজো এখন পরিচালনা করেন স্থানীয় মৎসজীবীরাই। আশেপাশের চারটি গ্রাম চকরাহাতপুর, কোবলা, দুলেপাড়া ও বিদ্যানগর থেকে মৎসজীবীরা জাঁকজমকভাবে পুজো করেন মা কালীর। গ্রামগুলি থেকে মৎসজীবীরা ঢাক-ঢোল, বাজনা সহকারে কাঁকড়া ও চুনো মাছ-সহ মাছের বিভিন্ন পদ নিয়ে এসে নিবেদন করেন। এছাড়া থাকে সোনাখরকে ভাজা, মৌরলা ভাজার পাশাপাশি পুঁটি, খয়রা, কাঁকড়া থাকছে। এছাড়া থাকবে শোল, কই, দেশি সিঙির মতো মাছের পদ। ভেদা ও চাঁদা মাছ দিয়ে করা মাছের টক।
বর্তমানে বিলের ধারে মন্দির নির্মাণের পাশাপাশি দেবীর স্থায়ী মূর্তিও প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আর এই পুজোয় মেতে ওঠেন আশেপাশের চারটি গ্রাম। এখন ওই দুটি বিল সংস্কারের পাশাপাশি এলাকার অনেক উন্নয়ন হয়েছে। চারপাশে ঢালাই রাস্তা, বৈদ্যুতিক আলো, গেস্ট হাউস, হাউসবোট তৈরি ছাড়াও কয়েকশো একর জমিতে চাষ করতে পারছেন চাষিরা। এখানে ইকো ট্যুরিজম পার্কও করা হবে বলেও জানিয়েছেন স্বপন দেবনাথ।