নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে করোনার বেলাগাম সংক্রমণকে কিছুতেই রোখা যাচ্ছে না। আগের দিনের তুলনায় দৈনিক সংক্রমণ সামান্য কমলেও দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। দৈনিক সংক্রমণের পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যুসূচকও ঊর্ধ্বমুখী। মারণ ভাইরাসের থাবায় মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়েছেন আরও ১৩ জন। সবচেয়ে উদ্বেগের হল, নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৫৯ শতাংশে। অর্থাৎ প্রতি পাঁচজনের একজনই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
গত সোমবার রাজ্যে করোনায় নতুন করে সংক্রমিত ৪৫২ জনের হদিশ মিলেছিল। তার পর থেকেই সংক্রমণ বেলাগাম হয়ে উঠেছিল। রবিবার সপ্তাহের শেষদিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৬ হাজার ১৫৩ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সোমবার থেকেই একগুচ্ছ বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে রাজ্যে। সেই বিধিনিষেধ কতটা সুফল বয়ে আনল তা জানতে বেশ কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।
কিন্তু এদিন সন্ধ্যায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে যে দৈনিক করোনা বুলেটিন প্রকাশ হয়েছে, তা যথেষ্টই অশনিসঙ্কেত বয়ে এনেছে। বুলেটিন অনুযায়ী, ‘গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৩১ হাজার ৩০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নয়া নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ৬ হাজার ৭৮ জনের শরীরে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে রাজ্যে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ২২৮ জনে। প্রাণঘাতী ভাইরাসের ছোবলে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ জন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনার বলি হলেন ১৯ হাজার ৭৯৪ জন।’
কলকাতায় সংক্রমণ চিত্রের সামান্য উন্নতি ঘটেছে। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ফের তিন হাজারের গণ্ডির নিচে নেমে এসেছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮০১ জন। প্রাণ হারিয়েছেন আরও চারজন। উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক সংক্রমণ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। প্রাণঘাতী ভাইরাসের ছোবলে মৃত্যু হয়েছে আরও চার জনের। হাওড়ায় ৬৬৫, হুগলিতে ৩৪০ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২৫৮ জন সংক্রমিত হয়েছেন।
উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাও। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ‘গত ২৪ ঘন্টায় প্রাণঘাতী ভাইরাসকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ হাজার ৯১৭ জন। এ নিয়ে মারণ ভাইরাসকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেন ১৬ লক্ষ ১৫ হাজার ২৪৮ জন। একদিনে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে তিন হাজার ১৪৮ জন। যার ফলে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ১৮৬ জন। সুস্থতার হার কমে দাঁড়িয়েছে ৯৭ দশমিক ৫৮ শতাংশে।’