নিজস্ব প্রতিনিধি: পেগাসাস ও কৃষি বিল নিয়ে চলতি বছরের বাদল অধিবেশনে উত্তপ্ত হয় রাজ্যসভা। এই দুই ইস্যুতে ওয়ালে নেমে আন্দোলন চালায় ২০ জন বিরোধী সাংসদ। যার মধ্যে ১২ জন সাংসদকে গত সোমবার চলতি অধিবেশনে সাসপেন্ড করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ক্ষমা চাইলে ভাবতাম কিন্তু এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সাংসদদের শীতকালীন অধিবেশনে কক্ষে প্রবেশ নিষেধ। যা নিয়ে সংসদের ভিতরে ও বাইরে উত্তাল পরিস্থিতি। আন্দোলন চালাচ্ছেন তৃণমূল, কংগ্রেস, অকালি, টিআরএস সহ বাকি দলের সাংসদরা। এইভাবে গোটা অধিবেশনে সাংসদদের সাসপেন্ড ভারতের সংসদীয় ইতিহাসে বিরল ঘটনা। বুধবার দিল্লি থেকে সাংবাদিক বৈঠকে তেমনটাই জানালেন সাংসদ সৌগত রায়।
তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি প্রথম লোকসভায় আসি ১৯৭৭ সালে। মোরারজি দেশাই তখন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭৯ সালে কেন্দ্রে মন্ত্রী হয়েছিলাম। সেই থেকে পার্লামেন্ট দেখছি। মাঝে অনেকদিন ছিলাম না। বিধানসভায় ছিলাম। আবার ২০০৯ সালে ফেরত আসি। এইরকম সংসদীয় অবনমন কোনওদিনও দেখিনি। পার্লামেন্টারি স্ক্রুটিনি ধীরে ধীরে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। লোকসভা, রাজ্যসভা যা কমিটিতে পাঠায়, সেগুলো কমে যাচ্ছে। অরডিনান্সের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বর্ষাকালীন অধিবেশনে আলোচনা ছাড়াই রাতের অন্ধকারে সমস্ত বিল পাশ করা হয়েছে। সুতরাং আইন নিয়ে সংসদে আলোচনায় হচ্ছে না।’
এইভাবে গত অধিবেশনের ঘটনার জন্য পরের অধিবেশনে শাস্তি দেওয়া বিরল ঘটনা। সেই প্রসঙ্গে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডুর দিকে আঙুল তুলে সৌগত রায় জানিয়েছেন, ‘রাজ্যসভায় ১২ জন সাংসদকে যেভাবে সাসপেন্ড করা হল, সেটা খারাপ। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এই ১২ জনের মধ্যেও বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা চালাচ্ছে শাসকদল। আমি জানি দু’জন সাসপেন্ডেড সাংসদকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। চেয়ারম্যান নিজে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। তাঁরা যাননি। সেইজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ তাঁদের। আমরা ডিসরাপশন করব না। তৃণমূল সেই নীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমাদের দু’জন সদস্যকে বাইরে রেখে আলোচনায় অংশ নেওয়া বেদনাদায়ক। কিন্তু, আমি চাইব যে পার্লামেন্টে আলোচনা চলুক। দুঃখপ্রকাশ তো সরকারের করা উচিত। রাতের অন্ধকারে কৃষি বিল পাশ করা হয়েছিল। আমাদের অবস্থান চলবে। যদি সুরাহা না হয়, তাহলে ২৩ ডিসেম্বর অবধি বিক্ষোভ চলবে।’