নিজস্ব প্রতিনিধি, আন্দামান: সভ্যতার আলো থেকে অনেকটা দূরে ওদের বাস। গভীর জঙ্গলই ওদের ডেরা। যেখানে সভ্য মানুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ভয়ে ভুল করেও ওদের ডেরায় ঢোকার সাহস দেখান না পর্যটকরা। শুক্রবার সেই ওরাই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে প্রথমবার দিলেন ভোট। অংশ নিলেন গণতন্ত্রের সেরা উৎসবে। শুধু তাই নয়, ভোট দেওয়ার পরে প্রতীকী ইভিএমের সামনে দাঁড়িয়ে নিজস্বীও তুললেন।
২০১১ সালের আদমসুমারি অনুযায়ী, আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে শিমোপেন জনগোষ্ঠীর জনসংখ্যা ২২৯। তার মধ্যে ভোটার তালিকায় নাম উঠেছে ৯৮ জনের। ওই ৯৮ জনকে গণতন্ত্রের উৎসবে সামিল করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিল আন্দামানের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। ভাষাগত সমস্যা যাতে প্রতিবন্ধকতা হয়ে না দাঁড়ায় তার জন্য দোভাষীরও সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে (ইভিএমে) কীভাবে ভোট দিতে হয়, ভিভিপ্যাট-ই বা কীভাবে কাজ করে তা বোঝানোর পাশাপাশি প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখতে জঙ্গলের মধ্যেই এক বন কর্মীর বাড়িতে তৈরি করা হয়েছিল ভোট কেন্দ্র। শুক্রবার সকালে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে সেই বুথেই প্রথমবার নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন শিমোপেন জনজাতি গোষ্ঠীর সাত ভোটার। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বিএস জাগলান বলেন, ‘আন্দামানের মূলবাসী হিসেবে যে সমস্ত জনজাতি গোষ্ঠী রয়েছে তার মধ্যে গত লোকসভা ভোটে ওনগে এবং গ্রেট আন্দামানিরা প্রথমবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন। এবার যাতে শিমোপেন জনজাতিকে ভোট উৎসবে সামিল করা যায় তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। অন্তত সাত জনকে ভোটের গুরুত্ব বোঝানো সম্ভব হয়েছে। আগামী দিনে বাকিদেরও সামিল করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।