এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

লোনক হ্রদ বিপজ্জনক, সতর্কবার্তা থাকলেও কানে তোলেনি সিকিম সরকার

Courtesy - Google

নিজস্ব প্রতিনিধি: ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭ হাজার ১০০ ফুট ওপরে হিমালয়ের(The Great Himalaya) কোলে হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ(Glacial Lake) লোনক(Lonak)। সেই হ্রদের একদিকে রয়েছে একটি হিমবাহ যা ২৬০ ফুট গভীর, প্রায় ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং আধ কিলোমিটার চওড়া। সব মিলিয়ে ১.২৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই হিমবাহ। লোনক হ্রদও ১৬৮ হেক্টর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। কিন্তু গত ৫ দশকে সিকিমের বুকে তিস্তার(Teesta River) উচ্চ অববাহিকায় বিপুল পরিমাণে বনভূমি নষ্ট করে, পাহাড় কেটে, পাথর ফাটিয়ে রাস্তা, জলাধার, জনবসতি তৈরির কাজ হয়েছে ততই হিমবাহ সৃষ্ট লোনক হ্রদের জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। এই হ্রদের আয়তন এবং গভীরতা দ্রুত বাড়তে থাকায় International Center for Integrated Mountain Development বা ICIMOD সতর্কবার্তা দিয়েছিল সিকিম সরকারকে(Sikkim Government)। জানিয়েছিল, মেঘভাঙা বৃষ্টি হলে মহাবিপদ নেমে আসবে সিকিমে। ফেটে যেতে পারে লোনক হ্রদ। দেখা গেল মেঘ ভাঙা বৃষ্টি না হলেও লোনক হ্রদ ফেটে বড়সড় বিপর্যয় নেমে এল সিকিমের বুকে। ICIMOD’র সতর্কবার্তা কানে না তোলার জেরেই আজ সিকিমকে ভুগতে হচ্ছে।

ICIMOD উপগ্রহচিত্রের মাধ্যমে পুরো সিকিমে ৩২০টি হিমবাহ হ্রদের সন্ধান পেয়েছে। যেগুলির মধ্যে ১৪টি বিপজ্জনক বলে জানিয়েছিল তারা। সেই বিপজ্জনক হ্রদের তালিকায় ছিল দক্ষিণ লোনক হ্রদও। মঙ্গলবার লোনক হ্রদ ফেটে সিকিমে যে দুর্যোগ নেমে এসেছে, তার নেপথ্যে Glacial Lake Outburst Flood বা GLOF রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ হিমবাহ গলতে থাকায় হ্রদে বিপজ্জনক ভাবে জলের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল। ফলে হ্রদের দেওয়ালে ক্রমশ চাপ বাড়তে থাকে এবং একসময় সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে হ্রদ ফেটে যায়। হ্রদ ফাটা জল তীব্র গতিয়ে মাটি, কাদা, বালি, বোল্ডার নিয়ে ধেয়ে যায় তিস্তার বুকে। উপগ্রহ চিত্র বলছে, নেপালের ভূমিকম্পের ফলে এই হ্রদের নীচেরকার স্তরে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে। তার জেরেই চাপ বেড়ে গিয়েছিল হ্রদের গায়ে। নেপালের ভূমিকম্পের আগে পর্যন্ত এই হ্রদের গভীরতা ছিল ১০ তলা বাড়ির সমান। দৈর্ঘ্যে ছিল আড়াই কিলোমিটার এবং প্রস্থে ৬০০ মিটার।

বছর ১২ আগে এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছিল, যে ভাবে উষ্ণায়নের প্রভাব বাড়ছে, তাতে এই হ্রদে জমে থাকা বরফ দ্রুত গলতে শুরু করবে, সেই সঙ্গে জলস্তর বাড়বে। তার সঙ্গে যদি মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়, তা হলে হ্রদ ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে। অনেক সময় বরফে বরফে ঘষা লেগেও গলন প্রক্রিয়া দ্রুত হতে থাকে। সেই জল যদি তিস্তায় গিয়ে পড়ে তাহলে তার পরিণতি হবে মারাত্মক। তিস্তার উচ্চ অববাহিকায় ক্রমাগত নির্মাণ কাজ হচ্ছে। বিপুল পরিমাণে বনভূমি নষ্ট হয়েছে রাস্তা প্রসারিত করার জন্য। তার ওপরে তিস্তার বুকে বেশ কয়েকটি ব্যারেজ ও জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সিকিম ও দার্জিলিং হিমালয়ের অন্তর্ভুক্ত তিস্তার উচ্চ অববাহিকা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ওই এলাকায় প্রতিটি জলাধারই ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষাকালে ধস নামার প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে সম্প্রতি। এই অবস্থায় তিস্তার বুকে জলাধার যত না হয়, তিস্তার উচ্চ অববাহিকায় যত কংক্রিটের নির্মাণ না হয় ততই ভাল বলে সেই সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু সেই সমীক্ষার সতর্কবার্তা কানেই তোলেনি সিকিম সরকার।

ছবি বলছে, তিস্তার হড়পা বানে ২৫ হাজার কোটি টাকার চুংথাম জলাধার ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিদারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। চুংথামের এই বাঁধটি সিকিমের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, যার নাম সিকিম উর্জা। হড়পা বানে এই বাঁধেরই একাংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সংস্থার আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশের মারফত তাঁরা খবর পেয়েছিলেন তিস্তায় হড়পা বান এসেছে। তাঁর দ্রুত বাঁধে গিয়ে লকগেট খুলে দিতে চেয়েছিলেন যাতে দ্রুত সেই জল বেড়িয়ে যায়। কিন্তু তার আগেই বিপুল জলরাশি ধেয়ে এসে বাঁধের একাংশ ভেঙে ফাটিয়ে বেড়িয়ে যায় নীচের দিকে। আর তার জেরেই ২০০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু যা বাঁধের পাওয়ারহাউসের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় সকলের চোখের সামনে। জলের তলায় চলে যায় পাওয়ারহাউসও। বাঁধের একাংশ ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ৫১ লক্ষ কিউবিক মিটার জল একসঙ্গে তিস্তা দিয়ে নীচের দিকে নামতে শুরু করে। আর তাতেই বড় বিপর্যয় ঘটে যায় সিকিমে। বিপুল জলরাশি পাহাড় বেয়ে নীচে নেমে আসে। তিস্তার জলস্তর ১৫-২০ ফুট বেড়ে যায় এবং বিপুল জলরাশি ধ্বংসলীলা চালাতে চালাতে এগিয়ে যায়।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

আগাম জামিনের আর্জি যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িত দেবগৌড়া পুত্র এইচ ডি রেভান্নার

রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ দেবগৌড়ার নাতির প্রাক্তন গাড়ি চালক

সিধু মুসেওয়ালার খুনের ‘মূলচক্রী’ গোল্ডি ব্রার মারা যাননি, গুজব ওড়াল মার্কিন পুলিশ

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ জানানোয় মুম্বইয়ের স্কুল অধ্যক্ষকে পদত্যাগের নির্দেশ  

কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে নেই সিবিআই, সুপ্রিম কোর্টে আজব যুক্তি মোদি সরকারের

যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িত দেবগৌড়ার নাতির বিরুদ্ধে জারি লুকআউট নোটিশ

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর