নিজস্ব প্রতিনিধি, মুম্বই: প্রেম নাকি বড়ই নিষ্ঠুর। প্রেমে অন্ধ হয়ে মানুষ নাকি অনেক কিছুই করতে পারে। হয়তো তাই। মহারাষ্ট্রের রায়গড়ে ঘটা আঁতকে ওঠার মতো ঘটনা অন্তত তেমনই প্রমাণ দিচ্ছে। প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন এক মহিলা। কিন্তু ‘পথের কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল গর্ভজাত দুই শিশু। তাই নিজের হাতেই সন্তানদের খুন করে ফেললেন। সেই নৃশংস ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য একাধিক গল্পও ফাঁদলেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। জেরার মুখে শেষ পর্যন্ত নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন সন্তানঘাতী মা।
বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, ইয়াওয়াতমাল জেলার পুষাড়ের বাসিন্দা শীতল পোলের বিয়ে হয়েছিল রায়গড়ের খিয়িম গ্রামে। বিয়ের আগে থেকেই এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার। বিয়ের পরেও স্বামীর অগোচরে প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছিলেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়শই দাম্পত্য কলহ চলত। সম্প্রতি প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর পরিকল্পনাও করেছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর দুই সন্তান পাঁচ বছরের কন্যা এবং তিন বছরের পুত্র। শেষ পর্যন্ত পথের কাঁটা সরাতে গত ৩১ মার্চ নিজের গর্ভজাত শিশু সন্তানদের খুন করেন শীতল।
ঘটনার দিন বাজার থেকে ফিরে সন্তানদের অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান শীতলের স্বামী। তড়িঘড়ি দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে আলিবাউগ জেলা হাসপাতালে পৌঁছে যান তিনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে শিশু দুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে সন্দেহ হওয়ায় মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতালে শিশু দুটির দেহের ময়নাতদন্ত করানো হয়। ওই রিপোটেই উঠে আসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই একরত্তি শিশুর। ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেখেই সন্দেহ হয় পুলিশের। শুরুতে শীতল দাবি করেন, তাঁর স্বামী বাজারে যাওয়ার আগে থেকে দুই সন্তান ঘরে ঘুমোচ্ছিল। তিনি নিজেও ঘরের ভিতরে যাননি, অন্য কেউও ওই সময়ে বাড়িতে ঢোকেননি। কিন্তু তাঁর কথা বিশ্বাস করেননি তদন্তকারীরা। শীতলের ফোনের রেকর্ড ঘেঁটে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের হদিশ পায় পুলিশ। ওই যুবককে ডেকে পাঠানো হয়। লাগাতার জেরার মুখে শীতল খুনের কথা স্বীকার করে নেন। জানান, তোয়ালে দিয়ে তিনি দুই সন্তানের মুখ চেপে ধরে খুন করেছেন।