এই মুহূর্তে




রক্তাক্ত বলি নয়, বাতাসা বলি এই জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজোর রীতি

সুস্মিতা ঘোষ: বাতাসে ভাসছে শিউলির গন্ধ, কাশের দোলানি জানাচ্ছে, মা আসছে। চারিদিকে উমা আসার প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই বর্ধমান জেলাতেও শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর তোড়জোড়। বর্ধমানের নামকরা সুয়াতা জমিদার বাড়ির পুজো। প্রায় ৩০০ বছর ধরে চলছে সুয়াতা জমিদার বাড়ির দুর্গোপুজো। আর এই পুজোতে এখনো সাবেকিয়ানা বরাদ্দ রয়েছে। এখনও এখানে একচালার দুর্গা ঠাকুর পুজিত হয়। জমিদার বাড়ির একজন সদস্যের কথা অনুযায়ী, তাঁদের বাড়িতে পুরাকাল থেকেই নারায়ণ সেবার পর শুরু হয় দুর্গাপুজো, এটাই বংশ পরম্পরায় চলে আসছে। বৈষ্ণব মতেই পুজিত হন দেবী। সুতরাং এখানে রক্তবলির কোনো প্রথা নেই। তবে বলি হয়, বাতাসার। জানা গিয়েছে, অষ্টমী তিথিতে সন্ধিপুজোর সময় বাতাসা বলি হয় এখানে। অষ্টমী পুজো ও সন্ধিপুজো একইসঙ্গে পুজিত হন এখানে। এছাড়াও এই পুজোর রীতি চিরাচরিত রীতির থেকে অনেকটাই আলাদা। চতুর্দশী তিথিতে শ্যামাপুজোর মাধ্যমেই দুর্গার পুজোর সূচনা। মহালয়ার দিন চণ্ডীপাঠ হয়ে শ্যামার নিরঞ্জন হয়। মহালয়ার পর থেকে পঞ্চমী তিথি পর্যন্ত এই বাড়িতে চলে ঘট পুজো। পঞ্চমীতে দেবীর চক্ষুদান হয়ে ষষ্ঠীতে বোধন হয়। এরপর গণেশ পুজো, নারায়ণ পুজোর পর শুরু হয় দুর্গাপুজো।

কথিত হে যে, সন্ধিপুজোর সময় দেবী চন্ডীরূপ ধারণ করেন। তাই সন্ধিপুজোর আগে শালগ্রাম শিলা ঢেকে দেওয়া হয় লাল শালুতে। সঙ্গে ধুনোও পোড়ানো হয় সন্ধি পুজোর সময়। তাই ওই সময়ে বাড়ির মহিলারা মাথার ওপর একটি করে মাটির সরা রেখে দেবীর দিকে মুখ করে বসেন। এ যেন এক আলাদাই দৃশ্য। কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন তাঁরা তাঁদের মুখ। সঙ্গে মাথার উপর রাখা সরার মধ্যে ধুনো দিয়ে জ্বালানো হয় আগুন। এভাবেই ভক্তি নিবেদন করেন পরিবারের মহিলারা। এছাড়াও অষ্টমী তিথির শুরুতে, ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালানো হয়, যা নবমী তিথি শুরুর আগে পর্যন্ত জ্বলে। এছাড়াও এই জমিদার বাড়ির পুজোয় দেবীকে পরানো হয় শিউলি ফুলের মালা।

যেখানে ব্যবহৃত হয় ১০৮টি পদ্ম, ১০৮ টি বেলপাতা। নবমীর দিন ২৮টি ত্রিপত্র সম্বলিত বিল্বপত্র ও সাদা করবী ফুল দিয়ে পুজো করা হয় দেবীর। এছাড়াও ওইদিন নরণারায়ন সেবার আয়োজন করা হয়। তবে সব খাবারই থাকে নিরামিষ। দশমীতে হয় অপরাজিতা পুজো। এই পুজোতে মূল উপপাদ্য হল অপরাজিত ফুল।এরপর উমার যাওয়ার পালা। বরণ ,সিঁদুর খেলা এসবের মধ্য থেকেই বিদায় জানানো হয় মাকে। বিসর্জন পথে দিকে রওনা দেয় দেবী। যদি কোন বছর বৃহস্পতিবার দশমী তিথি পড়ে যায়, তবে সেই বছর একাদশীর দিন প্রতিমার বিসর্জন হয়। আর কোজাগরী তিথিতে দুর্গা মন্দিরেই আরাধনা করা হয় মা লক্ষ্মীর।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

দার্জিলিংয়ে হিমালয়ান রেলে চড়িয়ে মা দুর্গাকে রংবুলের বাংলো নদীতে নিরঞ্জন

লণ্ঠনের আলো দেখিয়ে উমাকে বিদায় সংখ্যালঘুদের, সম্প্রীতির ছবি মরা মহানন্দার ঘাটে

‘আসছে বছর আবার হবে’, বিষন্ন মন নিয়ে দশমীর রাতেও মণ্ডপে-মণ্ডপে হাজির দর্শনার্থীরা

দশমীতে হয় না বিসর্জন, উত্তরের চাষি পরিবারের কুটিরে ভান্ডানি রূপে বিশ্রাম নেবেন উমা

আবারও শুরু দিন গোনা! জেনে নিন আগামী বছরে দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট, কী কী বার থাকছে ছুটি?

প্রথা মেনেই ইছামতিতে বিসর্জন টাকি রাজবাড়ির দুর্গা প্রতিমার, নদীর পাড়ে ভিড় দুই বাংলার মানুষের

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ