নিজস্ব প্রতিনিধি: আর মাত্র ৩৮ দিন। দরজায় কড়া নাড়ছে বাঙালির প্রিয় উৎসব দুর্গোৎসব। চার ছেলে মেয়েকে নিয়ে মর্ত্যে পাড়ি দেবেন মা দুর্গা। এই দুর্গা পুজোর ৪ টে দিন প্রতিটি বাঙালি যেন সব দুঃখ-কষ্ট ভুলে মেতে ওঠে খুশির উৎসবে। সারা বছরে মাত্র একটি দিনের জন্যে কতই না অপেক্ষা করে থাকেন বাংলার মানুষজন। এই চারটি দিনের জন্যে আগে থেকেই ঠিক করা থাকে, ফ্যাশন, চারটি দিন কিভাবে কাটাবেন সেই পরিকল্পনা, কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া-দাওয়া। এদিন বাড়িতে রান্না বন্ধ, দামী ভিড় জমে দামী রেস্তোরাঁয়। পাড়ায় পাড়ায় অঞ্জলি দেওয়ার ধুম, নাচ-গান আরও কত কিছু। এক এক দিন, একেকটা পোশাকের সঙ্গে কী জুতো পরবেন, কোন গয়না পরবেন, সঙ্গী কে হবে? তার একটা লম্বা লিস্ট যেন আগেই থেকেই বাছাই করা থাকে।
তবে এই ব্যাপারগুলো গত দুই বছর একেবারে বিমুখ হয়ে গিয়েছিল। সৌজন্যে করোনা মহামারি। সভ্যতাকে একেবারে ঘরের চার দেওয়ালে বন্দি করে দিয়েছিল এটুকু ভাইরাস। কত মানুষ যে এই ছোট্ট ন্যানোমিটার সাইজের ভাইরাসের কাছে পরাস্ত হয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য। সেই কারণে তিলোত্তমাও সেজে ওঠেনি উমার বরণে। দুর্গা মূর্তি বানানোর প্রধান স্থান কলকাতার কুমোরটুলি, সেখানেও করোনার কোপে একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন মৃৎ শিল্পীরা। তবে ২০২২ যেন নতুন আশা দেখিয়েছে। দেশ এখন অনেকটাই সুস্থ। করোনার ভয় থাকলেও, এই বছর নতুন করে কলকাতা সাজবে উমার বরণে। বড় বড় প্যান্ডেলেও জমবে ভিড়। কুমোরটুলি পাড়ায় মৃৎ শিল্পীদের মূর্তি নির্মাণও আপাততঃ শেষ।
মহামারিজনিত ২ বছরের আপেক্ষিক স্থবিরতার পরে, দুর্গাপূজার শক্তি ফিরেছে কুমোরটুলির সরু গলিতে। ইতিমধ্যেই বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসবের প্রস্তুতি শুরু করেছেন কারিগররা। রথযাত্রার পর থেকেই মোটামুটি মূর্তি বানানোর অর্ডার পেয়ে যান তাঁরা, 50% কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করেছেন তাঁরা। দু বছর অভাব কাটিয়ে ফের তাঁদের মুখে হাসি ফুটেছে। পুজোয় পরিবারের সঙ্গে আনন্দে কাটানোর স্বপ্নও মূর্তি প্রস্তুতকারকরা।
তবে ইতিমধ্যেই প্রতিমার তৈরির কাজ শেষ হলেও দুর্গার অলংকার ও পোশাক তৈরি বাকি। এ বছর বিভিন্ন থিমের কারণে দেবী কি ভাবে সাজবেন, তার চূড়ান্ত আদেশ এখনো পাওয়া যায়নি। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাংলার উৎসব শুরু হয়ে যাবে। গত দুই বছরে, কোভিড মহামারির কারণে কুমোরটুলিতে যেনো ভাটা এসেছিল। এই বছরে মার্চ থেকেই অর্ডার পাওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এমনকি জানা গিয়েছে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই, কাশ্মীর, উড়িষ্যা এবং ভোপালের মতো বিভিন্ন রাজ্য থেকে অর্ডার পাওয়া মূর্তি পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে৷