নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ”হাতের উপর হাত রাখা খুব সহজ নয়, সারা জীবন বইতে পারা সহজ নয়” শঙ্খ ঘোষের এই কবিতার কথাই যেন ফের মনে করাল বিশ্বনাথ-আরতি। সেই চেনা রাস্তা, সেই বোল্পুর, সোনাঝুরি হাট আর তার মধ্যে আরতি বিশ্বনাথের পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত দাম্পত্যের রসায়ন। শুধুই কী তাই? মিলি-বিজন, বারিন-শর্মিষ্ঠা, পিউ-পলাশ এক এক চরিত্রের এক এক ধরণের রসায়ন ফুটে উঠেছে ছবিতে। শুক্রবার, ২০ মে মুক্তি পেলো ‘বেলাশুরু’।
‘বেলাশেষে’ যেখানে শেষ হয়েছিল সেখান থেকেই কী ‘বেলাশুরু’? বলে রাখা ভালো রিয়েল লাইফ স্টোরি থেকেই এই গল্প বেছে নিয়েছিলেন নন্দিতা-শিবপ্রসাদ। পবিত্র চিত্ত নন্দী ও গীতা নন্দীর জীবন থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে এই গল্প। একজন অ্যালজাইমার রোগী, যে কিনা সবকিছু ভুলতে বসেছেন তাঁকে অর্থাৎ সেই আরতিকেই এখন চোখে হারান বিশ্বনাথ।
দাম্পত্যের পঞ্চাশটা বছর যে বিশ্বনাথ সংসারের সমস্ত দায়িত্ব আরতির উপর দিয়ে নিশ্চিন্তে বাইরের দুনিয়া সামলাত সেই এখন আরতির সর্বক্ষণের সঙ্গী। আরতি সব ভুলতে বসেছে। চিনতে পারেন না তিনি কাউকেই। মনে প্রাণে সে এখন একজন শিশু। সোনাঝুরির হাটে মুখরোচক খাবার খাওয়া থেকে বাউল গানের তালে তালে তাল মেলানো সবেতেই এক শিশুসত্বা ধরা পড়ে। আর মাঝে মাঝে সব ভুলে গিয়ে নিজেদের ফরিদপুরের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়, বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে।
ছবিতে কবীর সুমনের গলায় গান ‘চলে গেছে গেছে যেদিন, মধুমাসে হাত ধরে’ এক অন্য মাত্রা যোগ করেছে। বলে রাখা ভালো ২২ মে স্বাতীলেখা সেনগুপ্তের জন্মদিন। তাঁর জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই ২০ মে দিনটিকে বেছে নেওয়া। শুধু তাই নয় সিঙ্গল স্ক্রিনকে বাঁচাতে এক অভিনব প্রয়াস দেখিয়েছে এদিন উইন্ডোজ প্রোডাকশন হাউজ। বহু বছর পুরানো কলকাতার বিজলি সিনেমা হলে আয়োজিত হয় এই ছবির প্রিমিয়ার।
শুধু তাই নয় বিজলি সিনেমায় শো শুরু হওয়ার আগে তাঁদের দুজনের জন্য ছিল নির্ধারিত চেয়ার। ‘বেলাশুরু’ পরিবারের সকলের সঙ্গে তাঁরাও যে উপস্থিত রয়েছে তাই যেন উপলব্ধি হল। যে সিনেমা হলে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বহু ছবির প্রিমিয়ার হয়েছে অতীতে। প্রায় তিন বছর পর ভবানীপুরের বিজলি সিনেমা হলে কোনও ছবির প্রিমিয়ার হল। সব মিলিয়ে এই ছবির মায়ায় দর্শক ”সোহাগে আদরে” বাঁধা পরতে বাধ্য।